অনলাইন ডেস্ক:: পাকিস্তানে কিছুতেই শেষ হচ্ছে না ফারাহ খান গোগি বিতর্ক। ঘুরে ফিরে তার নাম আসছে বার বার। ক্ষমতাসীন জোট বার বার তার বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার পক্ষ নিয়ে অনেকটাই সাফাই গেয়ে চলেছেন। ফারাহ খান ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। তিনি জ্ঞাত আয় বহির্ভুতভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ করেছে বর্তমান সরকার। আরও পরিষ্কার করে বলেছে, তিনি অবৈধ উপায়ে ৩২ কোটি রুপি কালো টাকা সাদা করেছেন ইমরান খানের সাধারণ ক্ষমার অধীনে। পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তিনি চলে গিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এসব বিষয়ে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় জবাবদিহিতা বিষয়ক ব্যুরো (এনএবি)। এ মামলায় ফারাহ খানকে দুবাই থেকে ফিরিয়ে আনা হবে বলেও জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন পিএমএলএন।
পিএমএল-এনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আতাউল্লাহ তারার বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ইমরান খানের সরকার ফারাহকে তার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ করে দিয়েছে
তিনি বলেন, পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজদারের কথিত সহায়তায় পাঞ্জাবে বদলি ও পোস্টিং-এর মাধ্যমে এসব অর্থ সংগ্রহ করেছেন ফারাহ খান। এর ফলে গত তিন বছরে তার সম্পদ ২১ কোটি রুপি থেকে বেড়ে ৮৫ কোটি রুপি হয়েছে। তিনি বলেন, এই টাকা দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি ফ্ল্যাটও কিনেছেন ফারাহ খান।
আতাউল্লাহ তারার বলেন- যেহেতু ইমরান খান তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন, তাই এতে প্রমাণ হয়ে যায় এই সম্পত্তি বেনামে আসলে কার। যেখানেই কোনো উন্নয়ন প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে, অর্থ কামাতে সেখানেই জমি কিনেছেন ফারাহ খান গং। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ইমরান খান যখন দেখেছেন তাকে গদি হারাতে হবে, তখনই ফারাহ খানকে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য করেছেন তিনি। এই ফারাহ খানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থা নেয়া উচিত। ইমরান খানকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে আতাউল্লাহ তারার বলেন, যদি ফারাহ খানের সম্পত্তি বেনামে আপনার না হয়, তাহলে তাকে দেশে ফেরত আসতে বলেন।
ওদিকে ফারহাত শেহজাদি ওরফে ফারাহ খান গোগির বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে লাহোর শাখা এনএবি। তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহিভর্‚ত আয়ের বাইরে অবৈধ সম্পদ জমা করা, অর্থপাচার এবং বিভিন্ন ব্যবসার নামে বিভিন্ন একাউন্ট বজায় রাখার অভিযোগ রয়েছে। গত তিন বছরে তার (ফারাহ গোগি) একাউন্টে ৮৪ কোটি ৭০ লাখ রুপির একটি বিশাল টার্নওভার পাওয়া গেছে। তার বর্ণিত একাউন্ট প্রোফাইলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এই বিষয়টি। এ কথা বলেছে এনএবি। তারা আরও বলেছে, এই অর্থ জমা হয়েছিল ফারাহ খানের ব্যক্তিগত একাউন্টে। জমা হওয়ার পর পরই অল্প সময়ের মধ্যে ওই অর্থ তুলে নেয়া হয়।
ফারাহ খানের আয়কর রিটার্ন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৮ সাল থেকে অজ্ঞাত কারণে তার সম্পদের ত্বরিত বৃদ্ধি ঘটে। উপরন্তু তিনি ঘন ঘন বিভিন্ন দেশ সফরে যেতে থাকেন। নয় বার গেছেন যুক্তরাষ্ট্র সফরে। ৬ বার গিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে।