সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামের মুসলিম মণিপুরি (পাঙ্গাল) সম্প্রদায়ভূক্ত ও পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ২৬টি পরিবারের ভোগদখলীয় ফসলী জমিতে আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ এর গৃহনির্মাণ না করে মুসলিম মণিপুরিদের শান্তিপূর্ণ ভোগদখল ও জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রকল্পটি অন্যত্র স্থানান্তরের দাবিতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে ২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ২৬টি পরিবারের পক্ষ থেকে এ আবেদন জানানো হয়।
ভূক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে- উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে তিলকপুর মৌজার বিভিন্ন দাগে ৭ একর ৩০ শতক ভুমিতে দীর্ঘ ৬৬ বৎসর যাবত তারা ভোগ-দখল এবং চাষাবাদের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। এ ভূমি ২৬টি পরিবারের জীবন জীবিকার উৎস। ১৯৯৯ সনে সরকার হতে একসনা বন্দোবস্তু নিয়ে এ ভূমির উপর নির্ভর করে ঘর-বাড়ি, বসত-ভিটা, নির্মাণ করে ধান, টমেটো, ফরাস, আলু, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরণের কৃষি ফসলাদি চাষাবাদের মাধ্যমে সংসার ও সন্তানাদির ভরনপোষন চালিয়ে যাচ্ছেন। চাষাবাদ হতে তাদের এক একটি পরিবারের বাৎসরিক প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় হয়।
মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে সম্প্রতি আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর অধীনে গৃহনির্মাণের জন্য সরকারি উদ্যোগে তাদের ভোগদখলীয় ওই ভূমি ব্যবহারের মাধ্যমে মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে। এ ভূমি হতে তাদের উচ্ছেদ বা বিতাড়িত করে গৃহনির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অপরিসীম ক্ষতিগ্রস্ত এবং সন্তানদের শিক্ষা জীবনও বন্ধ হয়ে পড়বে বলে তারা দাবি করেন। আদমপুর ইউনিয়নের আরও বিভিন্ন স্থানে ৫ শতাধিক পরিবার বসবাসের জন্য সরকারি খাসভূমি পরিত্যক্ত রয়েছে। সেইসব সরকারি খাসভূমি হতে স্থান বাছাই করে আশ্রয়ণ-২ এর গৃহনির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তারা সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। পাশাপাশি তাদের ভোগ-ব্যবহারকৃত ওই ভূমি পূর্বের ন্যায় ভোগ-ব্যবহারের সুযোগ প্রদানে সরকারি যাবতীয় নিয়ম নীতি অনুসরণ পূর্বক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদানেরও দাবি জানান।
২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিতভাবে প্রদত্ত গণদরখাস্ত এবং এর অনুলিপি আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক, সিলেট বিভাগীয় কমিশণারসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন- আদমপুর ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্প করার মতো আরও অনেক খাসজমি রয়েছে। সেসব স্থানে প্রকল্প স্থানান্তর করতে পারলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী উপকৃত হতো।
কান্দিগাঁও গ্রামের মুসলিম মণিপিুরিদের লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন- সরকারি খাস জমিতেই আশ্রয়ণ প্রকল্প হচ্ছে। তবে, মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের আবেদনটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।