কমলগঞ্জে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে ভেড়া বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

কমলগঞ্জে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে ভেড়া বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যদের আর্থসামাজিক ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ভেড়া বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিতরণকৃত ভেড়া ওজনে কম ও আকারে ছোট থাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফ মঈনউদ্দিন সাংবাকিদেরকে বলেছেন ‘এমপিকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়েছি, যা পারেন লিখেন’।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়- ভেড়া বিতরণের এ প্রকল্পের অধীনে কমলগঞ্জ উপজেলার ২০০ সুবিধাভোগী পরিবার রয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল বুধবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সাংসদ ড. মো. আব্দুস। উদ্বোধনের দিন ২০টি পরিবারে ৪০টি ভেড়া বিতরণ করা হয়। উদ্বোধনের একসপ্তাহ পর গত ২১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ৮০টি পরিবারে ১৬০টি ভেড়া বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণকৃত অধিকাংশ ভেড়াই ছিল প্রকল্পের নির্ধারিত আকারের চেয়ে অনেক ছোট। প্রতিটি ভেড়ার ওজন ৯ কেজি থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ ভেড়ার ওজন ছিল ৪ থেকে ৫ কেজি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির সাথে উপকারভোগীর ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফ মঈনউদ্দিনের যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের শর্তাবলি অমান্য করে ভেড়া বিতরণে নয়ছয় করেছেন।
উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা এলাকার চা শ্রমিক শ্রমিক জিতন সবর, সুমন রাজভরসহ উপকারভোগীরা অভিযোগ করেন, ‘সরকার আমাদেরকে ৯ কেজি ওজনের ভেড়া প্রদানের কথা বলেছে। ভেড়া লালনপালন বিষয়ক কর্মশালায় এমনটাই আমাদের জানানো হয়েছে। কিন্তু, গত বৃহস্পতিবার ভেড়া নিতে এসে দেখি একেকটার ওজন ৪/৫ কেজি। কোনো কোনোটা তার চেয়েও কম ওজনের।’
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন মনু-ধলই ভ্যালীর সভাপতি ও রহিমপুর ইউপি মেম্বার ধনা বাউরী বলেন, সরকারী হিসাব থেকে প্রতিটি ভেড়ার ওজন কমপক্ষে ৪-৫ কেজি কম ও আকারে অনেক ছোট। এ অনিয়ম নিয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা কোনো সঠিক জবাব দেননি। এতে মনে হচ্ছে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে প্রকল্পের শর্ত অমান্য করে কম দামে ছোট আকারের ও কম ওজনের ভেড়া কিনে বিতরণ করছেন। আর এতে তাদের আর্থিক লাভ হচ্ছে। এর ফলে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা পানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফ মঈনউদ্দিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমপিকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়ে নিয়েছি। ছোট হলেই কি, আর উপকারভোগীরা সেগুলো না নিলেই কি ? এতে আমার কিছু যায় আসে না। ‘আপনারা যা পারেন লিখেন’। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর জানতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, এটি শেখ সেলিম সাহেবের আত্মীয়ের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, ‘নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *