সুরমার ঢেউ সংবাদ :: সাবেক সেক্রেটারী মশাহিদকে বহিষ্কার করেছে মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব। এর আগে অর্থ আত্নসাৎসহ নানা অভিযোগে মশাহিদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার মডেল থানায় সামলা দায়ের করা হয়েছে। মশাহিদ আহমদ, তার সকল অপকর্মের সহযোগী শিপন মিয়া, জোসেফ আলী চৌধুরী, চিনু রঞ্জন দাশ ও বহিরাগত অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪/৫ জনকে আসামী করে ১৩ এপ্রিল বুধবার রাতে মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি শেখ মাহমুদুর রহমান মামলাটি দায়ের করেন ।
মামলার এজাহার ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারীসহ একাধিক সদস্য সূত্রে জানা গেছে- সেক্রেটারী থাকার সুবাদে মশাহিদ আহমদ মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের সদস্যদের প্রদত্ত ফি, আজীবন সদস্যেরকাছ থেকে সংগৃহতি ফি ও অনুদান এবং মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের নামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন সময়ে সংগৃহিত অনুদান প্রায় ১২ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন। শেখ মাহমুদুর রহমান সভাপতি নির্বাচিত হবার পর কমিটির সদস্যবৃন্দ মৌখিকভাবে বার বার হিসাব নিকাষ চাইলে মশাহিদ নানা অজুহাত দেখিয়ে সময়ক্ষেপণের একপর্যায়ে পদত্যাগ করে। এর প্রেক্ষিতে, সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য মশাহিদের সাথে আলোচনাক্রমে ১৩ এপ্রিল বিকাল ৪টায় সংগঠনের কার্যালয়ে এক সভা আয়োজন করা হয়। সভায় আলাপ আলোচনা শেষে বর্তমান সেক্রেটারীকে সবকিছু বুঝিয়ে দেয়ার সময় পরিকল্পিতভাবে মশাহিদ শিপন, জোসেফ, চিনু ও বহিরাগত অজ্ঞাত পরিচয় ৪/৫ জন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে একপর্যায়ে অতর্কিতে উপস্থিত সদস্যদের উপর হামলা চালায় এবং কার্যালয়ের জিনিষপত্র ভাংচুর করে। এ ঘটনায় সভাপতিসহ কয়েকজন আহত হন এবং সংগঠনের কিছু জিনিষপত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এসময় আহতদের শোরচিৎকারে আশপাশের লোকজন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সাংবাদিকদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি, যেকোন বিষয়ে থানায় জিডি, মিথ্যামামলা দিয়ে হয়রানী, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন, ফেসবুকে অপপ্রচার ইত্যাদির মাধ্যমে মশাহিদ বিভিন্ন লোকজনকে এমনকি সংগঠনের সদস্যবৃন্দকে অতীষ্ট করে তুলেছে। সর্বশেষ- উপরোল্লিখিত ঘটনার প্রেক্ষিতে মশাহিদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের ও মশাহিদকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়। মশাহিদ আহমদ গংদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের বিষয় নিশ্চিত করেছেন মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি ইয়াসিনুল হক।
উল্লেখ্য- এর আগে মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি থাকা অবস্থায় মশাহিদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ নানা অভিযোগ উঠলে, সে সংগঠনের অর্থ, রেজুলেশন খাতা, হিসাবের খাতা, পূরণকৃত সদস্য ফরম ইত্যাদিসহ তার সহযোগী শিপন মিয়া, চিনু রঞ্জন দাশ, আব্দুল বাছিত খান, সাইদুল ইসলাম ও মুকিদ ইমরাজকে নিয়ে সটকে পড়ে এবং পরবর্তীতে সাংবাদিক এম এ মুহিতকে সভাপতি ও নিজেকে সেক্রেটারী করে মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের দুইবছর মেয়াদী আরেকটি নতুন কমিটি গঠন করে। কিন্তু, অপ্সাত কারণে কিছুদিনের মধ্যেই সাংবাদিক এম এ মুহিত পদত্যাগ করেন। এরপর মশাহিদ তার আজ্ঞাবহ জাফর ইকবালকে পুতুল সভাপতি বানিয়ে অনিয়ম-দূর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা অব্যাহত রাখে। এ কমিটির মেয়াদান্তে মশাহিদ পুণরায় সেক্রেটারী ও শেখ মাহমুদুর রহমান নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবার পর আর্থিক অনিয়ম-দূর্ণীতিকে কেন্দ্র করে কমিটির সংখ্যাগরিষ্ট সদস্যদের সাথে বিরোধ বাধলে মশাহিদ পদত্যাগ করে। এরপর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারীকে আর্থিক হিসাবসহ দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া নিয়ে টালবাহানার পাশাপাশি সংগঠনের বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম চালাতে থাকে এবং সর্বশেষ ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারীসহ কমিটির সদস্যদের উপর চড়াও হলে, উভয়পক্ষের মধ্যকার বিরোধ সংঘাতে রুপ নেয়। এর প্রেক্ষিতে মশাহিদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও মশাহিদকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।