জুড়ী প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচন দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। জাল ভোট নিয়েও জায়ফরনগরে পাশ করতে পারলেন না স্বতন্ত্র আনারস প্রতীকের প্রার্থী হাবিব।
এলাকাবাসী গতকাল রবিবার ইউএনও বরাবরে বেলাগাঁও ওয়ার্ডের ফলাফল প্রত্যাখান করে বিজয়ী সদস্য প্রার্থী বিটলা কাশেমের বিজয়ের ঘোষণা বাতিলের দাবিতে এক স্মারক লিপি প্রদান করেন। জানা যায় নির্বাচন শেষে ভোট গণনাকালে দুই প্রতিদন্ধী প্রার্থীর এজেন্টদের বাক বিতন্ডার সুযোগে জায়ফরনগর ইউনিয়নের বেলাগাঁও কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার আলাউদ্দিন ব্যালট বাক্স নিয়ে উপজেলায় চলে আসেন। এর পূর্বে ফলাফল ঘোষণার সিটে এজেন্টদের স্বাক্ষর নিয়ে নেন তিনি। পরে ওই কেন্দ্রে কাশেম নামের একজন সদস্য প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। আর ওই কেন্দ্রের চেয়াম্যান প্রার্থীদের ফলাফল আটকে দেওয়া হয়। তাৎক্ষনিক উপজেলা পরিষদ ভবনে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমে হইচই পড়ে যায়। তখন স্বতন্ত্র ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা প্রভাবশালী আওয়ামী-যুবলীগ নেতা স্মরনাপন্ন হয়ে তার প্রতিকার চাইলে কর্মকর্তাদের উপর ক্ষেপে যান এবং তৎক্ষনাত ফলাফল ঘোষণার দাবী জানান। অবশেষে ফলাফল ঘোষণা করলে দেখা যায় স্বতন্ত্র ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী হাজী মাছুম রেজা বিজয়ী হয়েছেন। আর বেলাগাঁও ওয়ার্ডের হেভিওয়েট সদস্য প্রার্থীরা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার বিষয়টি সহজভাবে মেনে নেন নি। ওই ওয়ার্ডের ৭ সদস্য প্রার্থী নুরে আলম, শরিফুল ইসলাম, শাহনাজ মিয়া, তৈমুছ আলী, লিয়াকত আলী, কামরুজ্জামান ও রাশেদা আক্তার তানিয়া একজোট হয়ে কন্টিনালা কেন্দ্রিয় জামে মসজিদের সম্মুখে ওয়ার্ডের ভোটারদের নিয়ে শুক্রবার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবাদ সভা করেন।
ওই প্রতিবাদ সভায় তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার আলাউদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিব এর আনারস প্রতীকে এবং বিটলা কাশেমের ভ্যানগাড়ী প্রতীকে ১২শ জালভোট সীল মেরে মিশ্রিত করে দিয়েছে। প্রতিবাদ সভাটির ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়লে উপজেলা জুড়ে মানুষের মাঝে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়। বিক্ষুদ্ধ ভোটারদের ভয়ে বিটলা কাশেম আত্মগোপনে রয়েছেন। আর ভোট জালিয়াতির নায়ক স্বতন্ত্র আনারস প্রতীকের প্রার্থী হাবিব তড়িঘড়ি করে শনিবার সন্ধ্যায় তার গ্রামের বাড়ি জাঙ্গিরাইয়ে এক দোয়া মাফিলের আয়োজন করে এলাকার ভোটারদের অভিনন্দন জানান।
বেলাগাঁও কেন্দ্রের ভোটার আব্দুর রব, জামাল হোসেন, নজরুল ইসলাম, রফিক আহমদসহ অনেকেই বলেন, প্রথম থেকেই আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিব বিভিন্ন জায়গায় অন্য প্রার্থীর কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন এবং এবার তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে চমক দেখাবেন এমনটিই বলে বেড়াচ্ছিলেন। কিন্তু ভোট জালিয়াতি করেও চমক দেখাতে পারলেন না।
ভোট জালিয়াতির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ আলাউদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এই ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থীদের অভিযোগ থাকলে তারা আপিল করতে পারেন।
হাবিবুর রহমান হাবিবের নিকট ভিডিও ভাইরাল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব আমার প্রতিপক্ষরা করছে। আমিও পাল্টা প্রতিবাদ সভা করবো।