ইশরাত জাহান চৌধুরী :: মৌলভীবাজারে এবার পৌরসভা ও সদর উপজেলাসহ জেলার ৭টি উপজেলায় সার্বজনীন ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে সর্বমোট ১ হাজার ৫টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। গতবছরের মতো এবারও করোনা মহামারীর কারণে বিধি-নিষেধের মধ্যদিয়েই পালিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। ১১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে দেবী বোধনের মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে এবং ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ইতিমধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় এ উৎসবকে ঘিরে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে শেষ প্রস্তুতি। শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের জন্য কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে মৌলভীবাজার জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটি বৈঠকের মাধ্যমে নিজেদের নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়- এবছর জেলায় সর্বমোট ১ হাজার ৫টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলায় সার্বজনীন পূজামণ্ডপ রয়েছে ৮শ ৭৯টি ও ব্যক্তিগত পূজামণ্ডপ রয়েছে ১শ ২৬টি। এর মধ্যে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৯৫টি, মৌলভীবাজার পৌরসভায় ১৭টি, বড়লেখা উপজেলায় ১শ ৫০টি, জুড়ী উপজেলায় ৬৭টি, কুলাউড়া উপজেলায় ২শ ১৮টি, রাজনগর উপজেলায় ১শ ২৯টি, কমলগঞ্জ উপজেলায় ১শ ৫৩টি ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় রয়েছে মোট ১শ ৭৬টি পূজামণ্ডপ।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ রায় মুন্না বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান- এবছর করোনা মহামারীর কারণে মহাদশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের শোভাযাত্রা না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি জানান- জেলার সবগুলো পূজামণ্ডপে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জানা যায়- কেন্দ্রীয়ভাবে পূজা উদ্যাপনের জন্য সারা দেশে বিশেষভাবে ১৮টি নির্দেশনা দেয়া হয়। পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়- শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসবকে ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ইতিমধ্যে নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন পরিকল্পনাও। মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন- আমরা বরাবরের মতো এবারো দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। প্রতিটি পূজামণ্ডপ সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। মৌলভীবাজার শহরের সবচেয়ে বড় দুর্গোৎসব হয় পৌর এলাকার সৈয়ারপুরের ত্রিনয়নী ও আবাহনী পূজামণ্ডপে। ত্রিনয়নী পূজামণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় শিল্পী দীপক পালকে। এ সময় প্রতিমা তৈরির প্রস্তুতি নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন প্রতি বছর ব্যতিক্রমী প্রতিমা তৈরি হয় এ মণ্ডপে। এ বছর ২৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে। মৌলভীবাজার শহরের সবচেয়ে বড় ৩টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এগুলো হলো- সৈয়ারপুর এলাকার ত্রিনয়নী, ফরেস্ট অফিস রোডের আবাহনী ও কাশিনাথ স্কুল অ্যান্ড কলেজের খেলার মাঠে মহেশ্বরী পূজামণ্ডপ। এছাড়াও ব্যতিক্রমী রয়েছে রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁওয়ে লাল রঙের দুর্গা প্রতিমা। প্রতি বছরের মতো এবাও ব্যাপক দর্শনার্থী ও ভক্তদের আগমন হবে পূজামণ্ডপগুলোতে।