সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডি ইউনিয়নস্থিত রঙ্গীরকুল গ্রামে কুলাউড়া জালালীয়া দাখিল মাদ্রাসার বিতর্কিত সুপার মাওঃ আব্দুস শহিদের নেতৃত্বে একই গোত্রের ৪ ব্যক্তির দখলে থাকা ১৪.৭০ একর খাস ভূমিতে হোক ভূমিহীনদের নিজস্ব ঠিকানা। টিলা ও কৃষিজমি সম্বলিত উক্ত বিশাল ভূমি দখলদারিত্বের শুরুতে ৪ জনের ৪টি বাড়ী থাকলেও বর্তমানে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম গড়ে তুলেছেন আরও কয়েকটি বাড়ী। সময়ের পরিক্রমায় কুলাউড়া জালালীয়া দাখিল মাদ্রাসার বিতর্কিত সুপার মাওঃ আব্দুস শহিদের নেতৃত্বে স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী এবং অর্থ ও পেশীশক্তির বদৌলতে রঙ্গীরকুল গ্রামে এ দখলদারদের প্রায় একছত্র আধিপত্য। গত ২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রয়োজনে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি টিম সরেজমিন উক্ত খাস ভূমি পরিদর্শন করেছেন।
খোজ নিয়ে জানা গেছে- রঙ্গীরকুল মৌজার ৫৭নং জেএলস্থিত ১নং এসএ খতিয়ানভূক্ত ১৬৩১নং দাগের ২২.৩০ একর ভূমির মধ্যে ৭.৬০ একর ভূমি ইজারা নিয়েছে দিলদারপুর চা-বাগান। অবশিষ্ট ১৪.৭০ একর ভূমি একই গোত্রের ৪ প্রভাবশালী ব্যক্তি হোছন আলী, সফিক আলী, ছমর উদ্দিন ও কটু মিয়া দখল করে নেন।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে- হোছন আলীর পরিবারের ২ সদস্য সৌদিআরব প্রবাসী। সফিক আলীর পরিবারের সদস্য মাওঃ আব্দুস শহিদ কুলাউড়া জালালীয়া দাখিল মাদ্রাসার বিতর্কিত সুপার। ছমর উদ্দিনের পরিবারের ৪ সদস্য কাতার প্রবাসী ও কটু মিয়ার পরিবারের ১ সদস্য আমেরিকা প্রবাসী। এরা ছাড়া পরিবারগুলোর অন্যান্যরাও স্থানীয়ভাবে স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত ও স্বচ্ছল। মাওঃ আব্দুস শহিদ শিক্ষাদীক্ষা ও চাকুরীর সুবাদে উল্লিখিত ৪ পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে অগ্রগামী ও প্রভাবশালী হওয়ায় তার নেতৃত্বেই চলছে উক্ত ১৪.৭০ একর খাস ভূমির দখলদারিত্ব। তাদের দাবী- উক্ত তাদের ক্রয়সূত্রে মালিকানাধীন ভূমি। কিন্তু, নির্ভরযোগ্য ওই সূত্রগুলো জানায়- দখলদাররা যে ক্রয়দলিলের উল্লেখ করছে তা ভূয়া। কারণ, ওই দলিল সৃষ্টির বহু পূর্ব থেকেই উক্ত ভূমি খাস ভূমি হিসাবে রেকর্ডকৃত।
ওই সূত্রগুলো ছাড়াও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে- উপজেলার অন্য কোথাও এক ব্লকে এত বিশাল খাসভূমি আছে কি-না সন্দেহ। এখানে অনায়াসে ৬ থেকে সাড়ে ৬শ ভূমিহীন পরিবারকে ঠাই দেয়া যাবে। এলাকাসহ উপজেলায় বহু ভূমিহীন পরিবার রয়েছে। এখানে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ভূমিহীন পরিবারগুলো উপকৃত হবে। তাই, উক্ত খাস ভূমিতেই প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়া সবদিক থেকেই উত্তম।
এ ব্যাপারে সরেজমিন হোছন আলী, ছমর উদ্দিন ও কটু মিয়ার উত্তরসূরীরা বলেন- আমরা সরকারী খাস ভূমি জবরদখল করিনাই। এ ভূমি আমাদের পূর্বপুরুষের ক্রয়কৃত ভূমি। আমাদের দলিল রয়েছে। আমরা মৌরসী সূত্রে মালিক। মাওঃ আব্দুস শহিদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদেরকে কোন বক্তব্য দিতে বাধ্য নন বলে জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ২৭ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান- ভূমিটুকু তদন্ত করে এসেছি, স্থান চিহ্নিত হলে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।