ইশরাত জাহান চৌঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচন কে সামনে রেখে নৌকার প্রার্থীর সাথে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সরকারি শিক্ষকরা। জনসংযোগ, সভা, সমাবেশে প্রকাশ্যে নৌকার প্রার্থীর জন্য ভোট চাইছেন তারা। এই শিক্ষকরাই বিভিন্নভাবে প্রিজাডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন বিধায় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের ছবি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এইসব ছবি ভিডিওতে দেখা গেছে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। যাদের মধ্যে উল্লেখজনক হলেন শ্রীমঙ্গল শহরের চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহর তরফদার, উত্তর বরুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অঞ্জন দেব, রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অলক পাল প্রমুখ।
সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার উত্তর বরুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অঞ্জন দেব উপজেলার গন্ধব্যপুর এলাকায় নৌকার প্রার্থীর সাথে গন সংযোগ ও নির্বাচনী জন সভায় অংশ নেন। গত বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে নৌকার নির্বাচনী সভায় অতিথি হিসেবে অংশ নেন জহর তরফদার।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্য প্রার্থীরা। ইতিমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সতন্ত্র প্রার্থী আফজল হক ।
আফজল হক জানান , আমরা একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের কাছে বার বার দাবি জানাচ্ছি। আমরা লক্ষ্য করছি শ্রীমঙ্গলের বেশ কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক প্রকাশ্যে নৌকার প্রার্থীর হয়ে ভোট চাইছেন। গণ সংযোগ, সভা সমাবেশ করছেন, এরাই আবার নির্বাচনে প্রিজাডিং কর্মকর্তা ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। আমি এই বিষয় টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এটি সুষ্ঠ নির্বাচনে বাধা হচ্ছে।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য জহর তরফদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অভিযোগের ব্যাপারে তার জানা নেই। তিনি এসব কোন কিছুর সাথে জড়িত না। দলীয় বা নির্দলীয় কারো পক্ষ নিয়ে তিনি কোন প্রচারণায় অংশ নেন নি। নিরপেক্ষ নির্বাচনে তার অবস্থান স্পষ্ট। এবারের দুর্গাপূজার পুজা উদযাপন পরিষদের জেলা কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদে থাকায় গতকাল পুজা উদযাপন কমিটির প্রস্তুতি সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে নৌকা প্রতীকের ভানুলাল রায়ও ছিলেন। সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যে কেউ আসতে পারে এখানে কোন বিধিনিষেধ নেই জানিয়ে তিনি বলেন,তাকে নিয়ে যদি কোন প্রার্থীর সন্দেহ থাকে তবে আসন্ন নির্বাচনে তিনি কোন দায়িত্বে থাকবেন না।
সতন্ত্র প্রার্থী প্রেম সাগর হাজরা বলেন, নির্বাচনে যেহেতু সরকারি চাকুরিজীবীরা কারো পক্ষ হয়ে প্রচারে অংশ নিতে পারে না, সেহেতু বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে দেখতে হবে। এভাবে সরকারি কর্মচারী ও কর্মকর্তারা এক পক্ষের হয়ে প্রচারণা চালাতে পারেন না।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাফর আল সাদিক বলেন, শিক্ষক শুধু নয়, নির্বাচনী প্রচারণায় রাষ্ট্রের কোন সরকারি চাকুরিজীবী অংশ নিতে পারবে না। কোন শিক্ষক যদি এমনটা করে থাকেন, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের উপ নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তপনজ্যোতি অসিম বলেন, আমি একটু বাইরে আছি তাই অভিযোগের কপি এখনো দেখিনি। ঘটনা সত্য হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, কোন সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তা প্রচারে অংশ নিতে পারেন না।