সুরমার ঢেউ সংবাদ :: শ্রীমঙ্গলস্থ দেশের ২য় চা নিলাম কেন্দ্রে এই প্রথমবারের মতো নিলামে উঠেছে হারবাল হানি গ্রীণ টি। এ চা উৎপাদন করেছে বৃন্দাবনপুর চা বাগান- যা প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ১শ টাকা দরে। এটা এ নিলামের সর্বোচ্চ দর। এর আগে গত জুন মাসে দেশের বাজারে হানি গ্রীণ টি প্রথম বাজারজাত করে শাহবাজপুর চা বাগান। বাংলাদেশে নতুন আবিস্কৃত এ চা উৎপাদকারী বৃন্দাবনপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক মোঃ নাসির উদ্দিন খান জানান- সৌখিন চা পায়ীদের জন্য তারা বিশেষ এ চা তৈরী করেন। তিনি জানান- গ্রীণ টি’র সাথে উন্নত জাতের যষ্টিমধুর ডাল সংগ্রহ করে ভালো করে ওয়াস করে তা কুচি কুচি করে মিশ্রণ করে দিয়েছেন। এটি পানের সময় চায়ের সাথে যষ্টিমধুর ফ্লেভার পাওয়া যায়। যারা চিনি দিয়ে পান করেন তাদের চিনি কিছুটা কম দিলে চলবে। এর আগে তিনি ইয়োলো টি ও হোয়াইট টি উৎপাদন করে বাজারের সর্বোচ্চ দরে বিক্রি করেন। তিনি জানান- এর উপকারিতা রয়েছে অনেক। এটি মুলত গাছের শেকড়- যা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যপক হারে ব্যবহৃত হয়।
শ্রীমঙ্গলের সবুজবাগের বাসিন্দা শক্তি ঔষধালয়ের অবসরপ্রাপ্ত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক রবীন্দ্র চক্রবর্তী ওরফে রবীন্দ্র কবিরাজ জানান- যষ্টিমধুর অনেক উপকারীতা রয়েছে। এটি পাকস্থলীর এপিথেলিয়াল কোষসমূহ শক্তিশালী করে গ্যাস্ট্রিক আলসার, পেপটিক আলসার নিরাময় করে। যষ্টিমধু তরল আকারে কফ বের করে দেয় এবং কাশি ভালো করতে পারে। এছাড়া ব্রঙ্কাইটিস, টনসিলাইটিস ও কণ্ঠনালীর প্রদাহ দূর করতেও সাহায্য করে। শ্রীমঙ্গল ব্রোকার্স লিমিটেড’র পরিচালক হেলাল চৌধুরী জানান- শ্রীমঙ্গল খান টাওয়ারস্থিত অকশন হাউজে অনুষ্ঠিত চলমান মৌসুমের ৮ম নিলামে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বৃন্দাবনপুর চা বাগান থেকে একটি বিশেষ চা ‘হারবাল হানি গ্রীণ টি’ অকশনে তুলে। শ্রীমঙ্গল ষ্টেশন রোডের ব্যবসায়ী পপুলার টি’র শহীদ আলম এটি প্রতিকেজি ২ হাজার ১শ টাকা দরে কিনে নেন। তিনি জানান- এ অকশনে এটাই সর্বোচ্চ দর। এ ছাড়াও অকশনে সর্বন্নিম দর ছিল ব্ল্যাকটি ১৫৩ টাকা।
শ্রীমঙ্গল টি প্ল্যান্টার অ্যান্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক জহর তরপদার জানান- ২০২১- ২০২২ অর্থবছরের ৮ম নিলামে মোট চা উঠেছে ২ লাখ ১৯ হাজার কেজি। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল ব্রোকার্স লিমিটেডের মাধ্যমে আসে ১ লাখ ১৪ হাজার কেজি, রুপসী বাংলা ব্রোকার্স এর মাধ্যমে ৫৮ হাজার কেজি ও জালালাবাদ টি ব্রোকার্স এর মাধ্যমে ৪৭ হাজার কেজি- যার প্রায় ৫০ শতাংশ চা বিক্রি হয়েছে।
অন্যদিকে, গত জুন মাসে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর চা বাগান তৈরী করে হানি টি। এটি বিটি-২ চায়ের একটি পাতা ও কুঁড়ির সাথে ন্যাচারাল মধু মিশিয়ে তৈরী করা হয়- যা পান করলে মধু ও চা দুটি ফ্লেভার পাওয়া যায়। এটি ৩ হাজার ১শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিলো।