ইশরাত জাহান চৌধুরী :: মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার বরচেগ গ্রামে একটি বনবিড়াল হত্যা হত্যার পর সেই বনবিড়ালের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) পোষ্ট করে উল্লাস প্রকাশ করেছেন হত্যাকারী। বিষয়টিকে খুবই অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক উল্লেখ করে মামলা দায়ের করবে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বরচেগ গ্রামের মোঃ মোস্তফা মিয়া বিপন্ন প্রায় প্রজাতির একটি বনবিড়াল হত্যা করেন এবং সেই বনবিড়ালের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে উল্লাস প্রকাশ করেন।
হত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত মোঃ মোস্তফা মিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তার মামাতো ভাইয়ের ফার্মে এসে বন বিড়ালটি মোরগ খেয়ে ফেলত। এজন্য তার মামাতো ভাই পিংকু মিয়া বিড়ালটিকে হত্যা করে এবং পরে মোঃ মোস্তফা ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে (অভিযুক্ত) তিনি নিজে হত্যা করেছেন বলে দাবী করেন।
প্রাণি গবেষকরা জানিয়েছেন, বনবিড়াল খুবই উপকারি প্রাণি। ঢাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক ও বন্যপ্রাণি গবেষক মুনতাসির আকাশ জানান, এর ইংরেজি নাম ঔঁহমষব ঈধঃ (বৈজ্ঞানিক নাম ঋবষরং পযধঁং)। এরা নিশাচর। একে জংলিবিড়াল, খাগড়াবিড়াল প্রভৃতি নামেও অভিহিত করা হয়। রাতের আঁধারে এরা ছোট ছোট পাখি বা পাখির ডিম, ছানা ইত্যাদি শিকার করে খায়। এক লাফে কয়েক ফুট পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। দিনের বেলায় এরা লতাপাতাঘেরা বড় গাছের কোটরে ঘুমায়। প্রজনন মৌসুমে গাছের কোটরে দু’ থেকে চারটি ছানা প্রসব করে। আইইউসিএন বাংলাদেশ এর তথ্য মতে, প্রজাতিটি বর্তমানে প্রায় সংকটাপন্ন। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, বন্যপ্রাণি হত্যা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কারো ক্ষতি করে থাকলে তারা তার ক্ষতিপূরণ দেন। হত্যা করে তারা অপরাধ করেছে। বনবিড়াল হত্যাকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন বলেও জানিয়েছেন এ বন কর্মকর্তা।