জুড়ী প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সাগরনাল ইউনিয়নের পাতিলাসাঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুর রহমানের বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের বিচার চেয়ে প্রতিবাদ সভা করেছেন অভিভাবকরা। বুধবার বিকেলে উপজেলার বটনীঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে প্রতিবাদ সভাটি অনুষ্টিত হয়।
বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আব্দুল মতিন পচাই’র সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী মাখন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি শামীম আহমদ, অভিভাবক মোস্তাক আহমদ, শামসুল ইসলাম, বাবুল কান্তি দাস, শাহিন আহমদ, প্রমেশ বাউরী, বিকাশ গোয়ালা, প্রমেশ গোয়ালা, জয়মতি উরাং, কৃপা কন্দ, নয়ন বোনার্জী, বিক্রম দত্ত প্রমুখ।
বক্তারা বলেন- বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ৭৯ জনের অধিকাংশই বাগানের দরিদ্র শিক্ষার্থী। অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও দরিদ্র পরিবারের সন্তান। এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণে প্রধান শিক্ষক তাজুর রহমান চাপ প্রয়োগ করে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ৩-৪ হাজার টাকা করে নেন। আমরা হাঁস, মোরগ, গরু, ছাগল বিক্রি করে টাকা দেই। পরে জানতে পারি শিক্ষা বোর্ড নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অনেক বেশি টাকা নেয়া হয়েছে। আমরা অতিরিক্ত টাকা ফেরৎ চাইলে প্রধান শিক্ষক উল্টো আমাদের ধমক দেন। তাছাড়া অনেক শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির টাকা অর্ধেক দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে বাকী অর্ধেক টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া বিভিন্ন বিল ভাউচার জালিয়াতি করে বিপুল পরিমান টাকা লুপাট করেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে গত ১১ আগস্ট লিখিত অভিযোগ দিলে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। সভায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ট বিচার দাবি ও অতিরিক্ত টাকা ফেরৎ চাওয়া হয়।
সাগরনাল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী মাখন বলেন, এলাকার গরিব অসহায় ও চা শ্রমিক পরিবারের মানুষের পক্ষে কথা বলায় দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক আমার দলী নেতা দিয়ে আমাকে মামলার হুমকি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে পাতিলাসাঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাজুর রহমান বলেন, টাকা আমি নেইনি। জুড়ী উপজেলার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মিলে যেমন শিলুয়া উচ্চ বিদ্যালয়, কচুরগুল উচ্চ বিদ্যালয়, ফুলতলা উচ্চ বিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলে গৃহিত সিদ্ধান্তে আমরা এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণ বাবদ ২২শত টাকা নির্ধারণ করি এবং রসিদসহ টাকা জমা নিয়েছি। জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও এ বিষয়ে অবগত আছেন।
তিনি আরও বলেন, দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ১৫শ থেকে দুইহাজার টাকা করে জমা নেয়া হয়েছে। এটা প্রতিষ্ঠান জমা নিয়েছে। আমি নিশ্চয় আমার ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করিনি। জমা নেয়া টাকাগুলো ফেরত দেয়া হবে কী না সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।