সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে এখন করোনা ভাইরাসের উপসর্গযুক্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জ্বর, সর্দি, কাশি, ব্যাথা ইত্যাদি উপসর্গে আক্রান্ত অজস্র রোগী পাওয়া যাচ্ছে। ফলে, জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভ্যাকসিন গ্রহণপ্রত্যাশীদের ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরতরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- গত কয়েকদিন ধরে জেলার বিভিন্ন গ্রামে করোনা ভাইরাসের উপসর্গযুক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তবে এসব সিজনাল ফ্লু অথবা করোনা ভাইরাসের উপসর্গ কি-না তা পরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে প্রায় প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাচ্ছে। করোনা ভাইরাসে অঅক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও কম নয়।
মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, চলতি ৩০ জুলাই ২০২১ সাল শুক্রবার পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৩শ ৬৪ জন- যাদের মধ্যে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অপরদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য-উপাত্তে দেখা গেছে, চলতি ৩০ জুলাই ২০২১ সাল শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে ৫ হাজার ৩শ ৫১ জনের শরীরে। অপরদিকে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর তথ্য দুই স্থানে দুই রকম হবার কারণ, সাধারণত মৌলভীবাজার জেলা থেকে যাদের করোনা পরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়, তাদের করোনা পরীক্ষার ফলাফল মৌলভীবাজার জেলার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেটাই তারা প্রকাশ করেন। কিন্তু, যারা জেলার বাহিরে অর্থাৎ সিলেট, ঢাকা বা অন্য কোথাও নমুনা দেন, সিভিল সার্জনের কার্যালয় তাদের ফলাফল মৌলভীবাজার জেলার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেনা। মৃত্যুর তালিকা তৈরির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম অনুসরণ করা হয়।
কিন্তু, স্বাস্থ্য অধিদফতর করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জেলার ঠিকানা অনুসারে, তিনি দেশের যে প্রান্তেই নমুনা দেন না কেন। অর্থাৎ মৌলভীবাজারের কোনো বাসিন্দা ঢাকায় অথবা সিলেটে বা দেশের অন্য কোথাও মারা গেলে বা করোনা পজিটিভ হলে, তাকে মৌলভীবাজার জেলার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী জেলা মৌলভীবাজারে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় ৫ এপ্রিল ২০২০ সালে। চলতি ২০২১ সালের ঈদুল ফিতরের পর থেকে হঠাৎ করে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। ২৮ জুলাই জেলায় এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ২২৫ জন করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে লকডাউন জারি করা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছেনা। ৩০ জুলাই ২০২১ সাল শুক্রবারের পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় মৌলভীবাজারে আরও ১৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এসময় মারা গেছেন তিনজন করোনা রোগী। আর সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন ১০৬ জন।