মৌলভীবাজারে বেড়েই চলেছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ, তবুও বন্ধ হচ্ছেনা নিষেধাজ্ঞা না মানার প্রবণতা

মৌলভীবাজারে বেড়েই চলেছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ, তবুও বন্ধ হচ্ছেনা নিষেধাজ্ঞা না মানার প্রবণতা

সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজারে দিন দিন বেড়েই চলেছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ। তবুও বন্ধ হচ্ছেনা নিষেধাজ্ঞা না মানার প্রবণতা। প্রবাসী অধ্যুষিত ও পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারে প্রতিদিনই বাড়ছে নতুন করে করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান। মৌলভীবাজারে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। দেশে উচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে এমন তালিকায়ও রয়েছে জেলাটি। মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্রে এ তথ্য জানা যায়।
১১ মার্চ থেকে জেলা জুড়ে নতুন করে সক্রমণের হার ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশ। সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্রে জানা যায় জেলায় করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব না থাকায় প্রতিদিন নিজ দায়িত্বে বিশেষ ব্যবস্থায় সংগৃহীত নমুনা সিলেটে পাঠাতে হচ্ছে। সেখান থেকে একদিন পর মিলছে পরীক্ষার রিপোর্ট। তাছাড়া, করোনার টিকা নিতে ও পরীক্ষা করাতে মানুষের আগ্রহ একেবারেই কম। ৭টি উপজেলা মিলে প্রতিদিন নমুনা সংগৃহীত হচ্ছে ১শ জনেরও কম। জেলা জুড়ে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
এদিকে, মৌলভীবাজারে শনাক্তের হার ৩১ শতাংশ- যা দেশের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ। এর আগে ছিলো ২২.২ ভাগ। মৌলভীবাজারে করোনা আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তি শনাক্ত হয় গত বছরের ৫ এপ্রিল। একবছরে এ জেলার ২ হাজার ৭৬ জন করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন। সরকারী হিসেবে মারা গেছেন ২৪ জন। মোট আক্রান্তের মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ১ হাজার ৯২৪ জন। ফেব্রুয়ারীর শুরুতে জেলায় দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল ৫ শতাংশের কাছাকাছি। কিন্তু মার্চের শেষে এ হার দাড়িয়েছে ৩০ শতাংশে। টিকা গ্রহণেও উৎসাহ কমে এসেছে। ফলে, জেলায় প্রায় হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ।
গত ৫ এপ্রিল হতে সন্ধা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত লকডাউন শুরু হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। ১লা বৈশাখ ও ১ রমযান ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউন কার্যকরে ১৩ এপ্রিল থেকেই মাঠে রয়েছে মৌলভীবাজারের প্রশাসন। আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা প্রতিপালন নিশ্চিতে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগণ, সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণের সচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা আজ ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা না মানায় এ পর্যন্ত শত শত মামলা ও লাখ লাখ টাকা অর্থদন্ড আদায় করা হয়েছে। তবুও বন্ধ হচ্ছেনা আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা না মানার প্রবণতা। শহরের শ্রীমঙ্গল রোডস্থ উত্তর জগন্নাথপুরের রহমান ফিলিং ষ্টেশনটি চোরাই পথে সরবরাহ করছে জ্বালানি। ফলে, লকডাউনের আওতাভূক্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যানবাহনও চলাচল করছে প্রায় অবাধে। জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশ আপ্রাণ চেষ্টা চালানো সত্তেও আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা লংঘনের ঘটনা ঘটছে প্রতিদিনই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *