সুরমার ঢেউ সংবাদ :: প্রথা অনুযায়ী প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তির পরের দিন চা বাগানের শ্রমিকরা ‘পাগলা ছুটি’ নামক (স্থানীয় নাম) এক প্রকারের ছুটি পেয়ে থাকেন। সেই ছুটিটা কতিপয় চা শ্রমিকরা ব্যবহার করেন দিনব্যাপী অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী শিকারের উদ্দেশ্যে। কিন্তু, এবার তাদের সেই শিকার ভেস্তে গেছে বনবিভাগের বন্যপ্রাণী শিকার বিরোধী প্রচারণায়। এ কাজে সহায়তা করেছে পরিবেশ-প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন মিতা ফাউন্ডেশন। সিলেট বন্যপ্রাণী রেঞ্জ সূত্র জানান, গত শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর অবধি মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসারের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি টিম শ্রীমঙ্গল উপজেলার কামাইছড়া এলাকা হয়ে দারাগাও চা বাগান, হাতিমারা চা বাগান, বৈরাগি পুঞ্জিসহ রেমা কালেঙ্গার কিছু এলাকা এবং সবশেষে বাইক্কাবিলের রাস্তায় গাড়ির উপরে মাইক বেধে বন্যপ্রাণী শিকারবিরোধী প্রচারণা চালায়। মিতা ফাউন্ডেশনের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রবি কস্তা জানান, আমাদের কাছে গোপন সূত্রে খবর আসে যে, গত শুক্রবার স্থানীয় চা শ্রমিকরা তীরধনুকসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্র নিয়ে শিকারে বের হবেন।
আমরা অতিদ্রুত বনবিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে উনাদের সাহায্য কামনা করি এবং আমরা কয়েকজন উনাদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে সম্মিলিতভাবে সফল হই। বনবিভাগের অবৈধ শিকার বিরোধী প্রচারণায় স্থানীয় শিকারীরা ভয় পেয়ে অনেকেই আত্মগোপন করে বলে জানান তিনি। সিলেট বন্যপ্রাণী বিভাগের মৌলভীবাজার রেঞ্জ অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা হবিগঞ্জ রেঞ্জ অফিসার মোতালেব হোসেন বলেন, যখনই আমরা জানতে পারলাম যে চা শ্রমিকরা পৌষ সংক্রান্তির ছুটিকে ঘিরে চা বাগান সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় বন্যপ্রাণী শিকার করবে তখনই মাইকের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী শিকার বিরোধী প্রচারণা শুরু করি এবং শতভাগ সফল হই। এসময় দু’টি বন্যপ্রাণী শিকারের ফাঁদ উদ্ধার ও ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের এরূপ প্রচারণা দেখে জনৈক ব্যক্তি খুশি এবং আবেগাপ্লুত হয়ে আমাদেরকে ৫০০ টাকার একটি নোট উপহার দেন। তবে আমরা টাকাটা নেইনি। উনাকে ফেরত দিয়ে বুঝিয়ে বলেছি যে, এগুলোই আসলে আমাদের কাজের অংশ। স্থানীয়ভাবে শিকার বন্ধে এরূপ প্রচারণা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান রেঞ্জ অফিসার মোতালেব।