সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজারে সাজানো মামলা দিয়ে প্রবাসী দম্পতিকে হয়রানির অভিযোগ দুইভাইয়ের বিরুদ্ধে। মৌলভীবাজার জেলাসদর উপজেলার বেকামুড়া (পাঠানতুলা) গ্রামের দুবাই প্রবাসী পাপিয়া সুলতানা রুনা, তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম মবশ্বির ও শ্বশুর আব্দুল মালিক পংকির বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে গত ০৪/০৭/২০১৯ইং এ মামলাটি (নং- পিটিশন ৩৭১/২০১৯ সদর, সিআর ৪৫১/১৯ সদর) দায়ের করেন একই গ্রামের ওমান প্রবাসী রাকিবুল ইসলাম নানু।
মামলার এজাহারে প্রকাশ- ভূমি ক্রয় করার জন্য নানু বিগত ০৭/০৪/২০১১ইং তার বড়ভাই ও মামলার ২নং স্বাক্ষী তরাজুল ইসলামের মাধ্যমে ৩ জন স্বাক্ষীর সম্মুখে নোটারীকৃত অঙ্গীকারনামামূলে রুনার নিকট ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রেরণ করেন। কিন্তু, ভূমি ক্রয় না করায় টাকা ফেরৎ চাইলে তা অস্বীকার ও হুমকী ধামকী প্রদান করার কারণে রুনা, মবশ্বির ও পংকির বিরুদ্ধে নানু আদালতে মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে, অভিযুক্তদের দাবী- নানুর দায়েরী মামলার বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট এবং অঙ্গীকারনামাটি জাল। অঙ্গীকারনামার ২য় পক্ষ ও মামলার ২নং স্বাক্ষী তরাজুল ইসলাম তার মায়ের উপর হামলা মামলায় (নং- জিআর ২৭৬/২০২০) জেলহাজতে রয়েছেন। তার স্ত্রী হামিদা বেগম জানান- আমার স্বামী লেনদেন করেছেন শুনেছি, তবে দেখিনি। অঙ্গীকারনামার ২নং ও মামলার ৩নং স্বাক্ষী সিতার মিয়া জানান- নানু ও রুনা আমার ভাইবোন হয়। তাদের মধ্যে কোন লেনদেন এবং নানু যে আমাকে মামলায় স্বাক্ষী করেছে তা আমার জানা ছিলনা। অঙ্গীকারনামায়ও আমি কোন স্বাক্ষর কিংবা টিপসই দেইনি। গত ১৫ নভেম্বর আমার অপর ভাই অঙ্গীকারনামার ২য় পক্ষ তরাজুল ইসলাম আমার মায়ের উপর হামলার ঘটনায় মামলার পর আমি জেনেছি। অঙ্গীকারনামায় আমার টিপসই জাল করে সাক্ষী করা হয়েছে। অঙ্গীকারনামার ৩নং সাক্ষী মুকিদ মিয়া জানান- আমি যা বলার কোর্টে বলবো। মামলার ৪নং সাক্ষী রায়না বেগম জানান- আমি বা আমার স্বামী এ মামলা সম্পর্কে এবং আমাদেরকে মামলার স্বাক্ষী করা সম্পর্কে জানিনা। নানু আমাদেরকে স্বাক্ষী করে ফাঁসিয়েছে। মামলার ৫নং স্বাাক্ষী আনকার বেগ জানান- নানু ও রুনার মধ্যে লেনদেন ও মামলা সম্পর্কে আমার জানা ছিলনা। পরে জানতে পারি নানু আমাকে মামলায় স্বাক্ষী করেছে। অঙ্গীকারনামা নোটারীকারী নোটারী পাবলিক মোঃ রেজাউর রহমান চৌধুরী জানান- এ অঙ্গীকারনামা আমি নোটারী করিনি। বাদীর বাড়িতে বিকাল ৪টায় অঙ্গীকারনামা নোটারী করা হয়েছে মর্মে এজাহারে উল্লেখ করা হলেও, আমি কখনও কারো বাড়িতে গিয়ে কোন অঙ্গীকারনামা নোটারী করিনি। অঙ্গীকারনামা সম্পাদনকারী পক্ষদ্বয়কে সনাক্তকারী এডভোকেট অমলেন্দু বিকাশ দেব জানান- আমি এ অঙ্গীকারনামা সম্পাদনকারী পক্ষদ্বয়কে সনাক্ত করিনি এবং আমাদের রেজিস্টারেও এটা তালিকাভূক্ত নেই। এটা অবশ্যই জালিয়াতির মাধ্যমে করা হয়েছে। মামলার দুই বিবাদী দুবাই অবস্থানরত রুনা ও মবশ্বির মুঠোফোনে জানান- নানু’র সাথে আমাদের কোন লেনদেন নেই। নানু জালিয়াতি করে আমার মায়ের ভূমি আতœসাৎ করার প্রতিবাদ এবং মাকে সহযোগীতা করার আক্রোশে নানু আমাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে এ মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তাছাড়া, গত ২৯/০৪/২০১৯ইং টাকা দিবনা বলে নানুকে প্রকাশ্যে হুমকি ধামকি প্রদান করেছি বলে এজাহারে বলা হলেও, আমরা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সাল থেকে দুবাই প্রবাসে রয়েছি। কাজেই, মামলার বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট এবং অঙ্গীকারনামাটিও জাল। সরেজমিন বেকামুড়া (পাঠানতুলা) গ্রামের একাধিক ব্যক্তি পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান- মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কেউই জানতো না বা কোন বিচার বৈঠকও হয়নি। ইদানীং এসব শোনা যাচ্ছে। মামলার বাদী ওমানে অবস্থানরত রাকিবুল ইসলাম নানুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।