সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার জুড়ী-ফুলতলা-বটুলী স্থলবন্দর রাস্তা মেরামত ও পূর্ব বটুলী গ্রামের রাস্তা নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করে ১৫দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন পূর্ব বটুলী এলাকাবাসী। আজ ১৬ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বক্তারা ১৫ দিনের মধ্যে রাস্তা মেরামতের কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে স্থলবন্দর রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেন।
স্থানীয় বটুলী আনোয়ারুল উলুম ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুুস ছামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- স্থানীয় ইউপি মেম্বার মঈন উদ্দিন, এম এ মতিন মতি, আমির হোসেন, আবু হানিফ, ইয়াকুব আলী, আসুক মিয়া, মকবুল মিয়া, মদরিছ আলী ও বদরুল ইসলাম।
বক্তারা বলেন, বটুলী চেক পোস্টের নিকট থেকে পূর্ব বটুলী গ্রামের রাস্তাটি দীর্ঘদিন থেকে নদীভাঙ্গন কবলিত। রাঘনা ছড়া নদীটি পশ্চিম দিকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কিছু অভ্যন্তরে ঢুকে বিশাল বাঁক নেয়ায় ছড়ার পূর্ব দিকের মূল অংশ ভরাট হয়ে ভারতীয় ভূখন্ডের সাথে মিশে যাচ্ছে।
অপরদিকে, নতুন বাঁক নেয়া অংশের ভাঙ্গনে পূর্ব বটুলী গ্রামের একমাত্র রাস্তার ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সামনের অংশ ৩/৪শ ফুট নদীতে বিলীন হয়ে মাদ্রাসার সীমানা দেয়ালে লেগে গেছে। যেকোন সময় এ দেয়াল ও রাস্তার অপর অংশে ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে। রাস্তার এ অংশটি ভেঙ্গে পায়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় স্থানীয়রা মাদ্রাসার এক পাশের সীমানা দেয়ালের কিছু অংশ ভেঙ্গে মাদ্রাসা আঙ্গিনার ভিতর দিয়ে চলাচল করছেন। বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় এ এলাকার প্রায় ২শ পরিবারের প্রায় ৬শ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র টহল কাজে বিঘœ ঘটছে। নদী ভাঙ্গন রোধে ২০১৬ সালে ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফয়াজ আলী বল্লী গেড়ে ও স্থানীয়রা গড় দিয়ে ভাঙ্গন প্রতিহতের চেষ্টা করেন। কিছুদিন পর সেগুলো নদীতে দেবে যায়। ২০১৯ ও ২০২০ সালে ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ ২ কিস্তিতে ভাঙ্গন রোধে পাকা দেয়াল তৈরি করেন। কিছুদিন পর সেটিও নদী ভাঙ্গনে ধসে যায়। অতি দ্রুত এ ছড়াটি মুল পথে ফিরিয়ে না নিলে পুরো গ্রামটি নদীতে বিলীন হয়ে ভারতের অংশে মিশে যাবার আশঙ্কা রয়েছে।
অপরদিকে, ফুলতলা-বটুলী ৬ কিলোমিটার রাস্তা মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দ্বিগুণ ভাড়া দিলেও কোন যানবাহন ও অ্যাম্বুল্যান্স এ এলাকায় যেতে চায়না। ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে জুড়ী-ফুলতলা-বটুলী স্থলবন্দর রাস্তা মেরামত কাজের মেয়াদ ১ বছর আগে শেষ হয়ে গেলেও ঠিকাদার এখনও ফুলতলা-বটুলী ৬ কিলোমিটার অংশে কাজ শুরুই করেননি। রাস্তার একপাশে কিছু ড্রেন করে ফেলে রেখেছেন। যে কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর ধৈর্য্যরে বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এখন লাফ দেয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই। তাই, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নদী ভাঙ্গন রোধ ও রাস্তা মেরামতের দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বটুলী স্থলবন্দর রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হবে। আমাদের বুকের ওপর দিয়ে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে, অথচ আমাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। রাস্তার কারণে কোন এলাকার মানুষ আত্মসম্মান বোধ ও সামাজিক মর্যাদা রক্ষা করে চলতে না পারলে এটা কোন সভ্য সমাজ মেনে নিবেনা।