রনি দে, জুড়ী মৌলভীবাজার) :: হাকালুকি হাওরের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সম্ভাবনা নিয়ে হাওরপারের কন্টিনালা রাবার ড্যাম এলাকায় ১৮ জানুয়ারী সোমবার দুপুরে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘বাঁচলে হাওর, বাঁচবে দেশ, রক্ষা হবে পরিবেশ’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে উক্ত মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জুড়ী উপজেলা সাংবাদিক সমিতি ও জুড়ী টাইমস পরিবার।
জুড়ী উপজেলা সংবাদিক সমিতির সধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-ইমরান রুহুল ইসলাম। হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তর কুলাউড়া কার্যালয়ের কর্মকর্তা সাইদ আল শাহীন।
হাওর ও মৎস্য বিশেষজ্ঞ ড. মাহবুবুল আলম মিয়া বলেন, হাকালুকির দেশিয় প্রজাতির মাছের বিলুপ্তি রোধ করতে বছরের আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে মশারি জাল ও কারেন্ট জাল সম্পুর্ণরূপে বন্ধ রাখতে হবে। তবেই হাওরে মাছের অভাব থাকবেনা। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জুড়ী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ, জুড়ী থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী, উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মতিন, উপজেলা কৃষি অফিসার জসিম উদ্দিন, জায়ফরনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মাছুম রেজা, সেভ দ্যা চিলড্রেন এর টেকনিক্যাল ম্যানেজার ফাতেমা কানিজ, মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক মরহুম তৈমুছ আলী এমপির ছেলে জুবের হাসান জেবলু, জুড়ী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশীদ সাজু, জুড়ী মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সীতাংশু শেখর দাস, গ্রাম উন্নয়ন কার্যক্রম (গ্রাউক) এর চেয়ারম্যান অশোক রঞ্জন পাল, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, প্রবাসী কমিউনিটি নেতা রহমত আলী, হাবিবুর রহমান, মানবাধিকার সংস্থা অভিযানের সমন্বয়কারী বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী তামলিমন বাড়ে, বড়লেখা উপজেলা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রব, জুড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ জয়িতা পুরস্কার প্রাপ্ত রোকেয়া রহমান, জুড়ী উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য শিরিন আক্তার, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মরহুম তৈমুছ আলী এমপির পুত্রবধু নায়ীমা খাতুন রিনু, বিশিষ্ট সমাজকর্মী ফরহাদ সুলতানা, হাকালুকি পারের হাল্লা গ্রামের পাখিবাড়ির স্বত্তাধিকারী মৃতঃ মনোহর আলী মাস্টারের বড়ছেলে আবু সালেহ আহমদ, বেলাগাঁও-সোনাপুর ভিসিজির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম সাদেক, একাডেমীক সুপারভাইজার আলাউদ্দিন, জুড়ী তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজের প্রভাষক শাখাওয়াত হোসেন, সিএনআরএস সুচনা প্রকল্পের উপজেলা প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সৈয়দ আব্দুস সামাদ, মনিটরিং ইভাল্যুয়েশন এন্ড নলেজ ম্যানেজমেন্ট অফিসার নুরুল আহমেদ মামুন, ইউনিয়ন কো-অর্ডিনেটর আনোয়ারুল ইসলাম, জুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দিন সাবেল, উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ, উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক ফখর উদ্দিন, পল্লী চিকিৎসক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন তালুকদার, জুড়ী উপজেলা সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম, শাহ আলম, সদস্য মনিরুল ইসলাম, ইকবাল খান, স্বাস্থ্যকর্মী সুফিয়া বেগম, ইমরুন নাহার সুমী, প্রবাসী রুহুল আমিন, সমাজসেবক আব্দুল গণি সরদার, আব্দুল বারেক সরদার, সমাজকর্মী রাহেলা খানম, সুবর্ণা, কবি আমিনুল ইসলাম সুমন, ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান জয়, তরুন সমাজসেবক হেলাল আহমদ, আল-আমিন প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও আল ইমরান রুহুল ইসলাম বলেন, আমাদের সবাইকে হাকালুকি হাওরের সম্পদ, পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণে কাজ করতে হবে। হাওর এলাকার মানুষকে হাওরের মূল্যবোধ বিষয়ে ও এর অস্তিত্ব রক্ষায় সচেতন করতে হবে। স্থানীয়ভাবে যুবসমাজকে সাথে নিয়ে হাওর ও জলাশয় রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
সভায় হাকালুকি হাওরকে রামসার সাইট ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, রামসার সাইট হিসেবে স্বীকৃত পৃথিবীর অন্যান্য জলাভূমির বৈশিষ্ট্য হাকালুকি হাওরে রয়েছে। হাকালুকি হাওরকে রামসার সাইট ঘোষণা করা দরকার। শীত মৌসুমে হাকালুকি হাওর হাজার হাজার দেশীয় এবং পরিযায়ী পাখির আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে। সেইসঙ্গে বৈচিত্রপূর্ণ বহু বিরল প্রজাতির মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর প্রজননক্ষেত্র এই হাওর। হাকালুকি হাওরকে রামসারের গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে এর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র বিশেষ সংরক্ষণের আওতায় আসবে- যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। সভাশেষে হাকালুকি হাওর নিয়ে এক কুইজ প্রতিযোগিতা এবং বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।