সুরমার ঢেউ সংবাদ :: নৌ পুলিশ স্টেশন স্থাপিত হচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলার টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকায়। এ তথ্য জানা গেছে, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত ‘হাওরে নৌ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কারণ ও প্রতিকার’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠান সূত্রে। ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক জানিয়েছেন, হাওরাঞ্চলে নৌ দুর্ঘটনায় মৃত্যু কমাতে হাওরাঞ্চলের নৌযানসমূহে আরও বেশি তদারকি বাড়ানো হবে। নৌকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সামগ্রী রাখা, অধিক যাত্রীবোঝাই না করা, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় যাত্রীবাহী নৌকা না ছাড়াসহ সকল বিষয়ে আইন মেনে চলতে হাওরাঞ্চলের নৌযানগুলোকে বাধ্য করা হবে।
২০ সেপ্টেম্বর রোববার পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা ‘হাওরে নৌ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কারণ ও প্রতিকার’ শীর্ষক ওই ভার্চ্যুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা’র সঞ্চালনায় এ আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নৌ পুলিশ বাংলাদেশ এর ডিআইজি মোঃ আতিকুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ ও হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ এর সভাপতি এড. মনজিল মোরসেদ।
নৌ পুলিশের ডিআইজি মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, হাওর এলাকার ৬টি জেলায় মাত্র ৬টি নৌ পুলিশ স্টেশন রয়েছে। জনবল কম থাকায় তারা ঠিকমতো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন না। তাই, অন্তত টাঙ্গুয়ার হাওরে একটি নৌ পুলিশ স্টেশন স্থাপন করলে দুর্ঘটনাপ্রবণ তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা এলাকায় নৌ পুলিশের তৎপরতা আরো বাড়ানো যাবে। তাই টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকায় নৌ-পুলিশের একটি স্টেশন করা হবে। জনবল সঙ্কটের কারণে বিআইডব্লিউটিএ-ও তাদের তৎপরতা সেভাবে বাড়াতে পারছে না বলে জানান বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যান কমরেড গোলাম সাদেক। অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ জেলায় বিআইডব্লিউটিএ এর একটি অফিস স্থাপন এবং নৌ-পুলিশের কয়েকটি পুলিশ স্টেশন করার দাবি জানান। এড. মনজিল মোরসেদ বলেন, শিপিং অধ্যাদেশ ১৯৭৬ এ অন্যান্য জলাভূমির কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও হাওরের কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। তাই অনেক সময় নৌ দুর্ঘটনায় দায়ীরা পার পেয়ে যেতে পারেন। তাই অধ্যাদেশে হাওরের বিষয়টা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে ভিডিও বক্তব্যের মাধ্যমে হাওরের নৌকার মাঝিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। মাঝিরা জানান, অনেক সময় যাত্রীদের অসচেতনতা, নৌকার ছাদে অবস্থান করার প্রবণতা, সাঁতার না জানা এবং হুড়াহুড়ির কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তাই যাত্রীদের সচেতনতাও প্রয়োজন। তবে, অনুষ্ঠানে যুক্ত সবাই নৌকার চালকদের সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের অভাবকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেন। এজন্য নৌকার মাঝিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক কাসমির রেজা জানান, লাইসেন্স ও ফিটনেস বিহীন নৌকা, চালকদের অসচেতনতা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সামগ্রী নৌকায় না রাখা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস কে তোয়াক্কা না করা এবং অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। এজন্য প্রত্যেকটি উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ নৌ-ঘাটগুলোতে নৌ পুলিশ এবং বিআইডব্লিউটিএ এর মনিটরিং জোরদার করতে হবে।