সুরমার ঢেউ সংবাদ :: ‘বসন্ত বাতাসে সই গো’, ‘কোন মেস্তরি নাও বানাইল’, ‘বন্দে মায়া লাগাইছে’, ‘তুমি মানুষ আমিও মানুষ’, ‘প্রাণে সহে না দুঃখ বলব কারে’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু ছেড়ে যাইবা যদি’, ‘ওরে ভব সাগরের নাইয়া’ ইত্যাদি অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গীতিকার ও সুরকার, ভাটির পুরুষ খ্যাত কিংবদন্তি বাউল স¤্রাাট শাহ আবদুল করিমের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী অতিক্রান্ত হলো ১২ সেপ্টেম্বর শনিবার।
বাউল স¤্রাট শাহ আবদুল করিম ১৫ ফেব্রুযারী ১৯১৬ সালে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধলআশ্রম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ইব্রাহীম আলী তার বাবার নাম ও নাইওরজান বিবি তার মায়ের নাম। দারিদ্র ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া শাহ আবদুল করিমের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। বাউল স¤্রাাটের প্রেরণা তার স্ত্রী- যাকে তিনি আদর করে ‘সরলা’ নামে ডাকতেন। শাহ আবদুল করিম ১৯৫৭ সাল থেকে পার্শ্ববর্তী উজানধল গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তার গান কথা বলে ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ, প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি সব অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরূদ্ধে। সুনামগঞ্জের কালনী নদীর তীরে বেড়ে উঠা শাহ আব্দুল করিমের গান শুরুতেই ভাটি অঞ্চলে জনপ্রিয় হলেও শহরের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পায় তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে কৃষিকাজে বাধ্য হলেও কোনো কিছুই তাকে গান রচনা থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
গানের মধ্যে প্রাণের সন্ধান পাওয়া শাহ্ আবদুল করিম রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদকসহ (২০০১) কথা সাহিত্যিক আবদুর রউফ চৌধুরী পদক (২০০০), রাগীব-রাবেযা সাহিত্য পুরস্কার (২০০০), লেবাক অ্যাওয়ার্ড, (২০০৩), মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার (২০০৪), সিটিসেল-চ্যানেল আই আজীবন সম্মাননা মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস (২০০৫), বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি সম্মাননা (২০০৬), খান বাহাদুর এহিয়া পদক (২০০৮), বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা (২০০৮), হাতিল অ্যাওয়াডর্স (২০০৯), এনসিসি ব্যাংক এনএ সম্মাননা ইত্যাদি অর্জন করেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে আফতাব সঙ্গীত, গণসঙ্গীত, কালনীর ঢেউ, ধলমেলা, ভাটির চিঠি, কালনীর কূলে, শাহ আব্দুল করিম রচনাসমগ্র উল্লেখযোগ্য। ভাটির পুরুষ খ্যাত কিংবদন্তি বাউল স¤্রাাট শাহ আবদুল করিম ২০০৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।