সুরমার ঢেউ সংবাদ :: জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধ রুখতে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আইনে নতুন নতুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপরাধ কমিয়ে আনা ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রেখে দেশে সেগুলোর অফিস স্থাপনেরও বিধান রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিষয়টি নিয়ে সরকারের শীর্ষ মহলের চিন্তার পর আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাতেও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য নতুন আইন প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত নতুন আইনে পুরো সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে আমরা কাজ করছি। আইনে ডেটা নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্য গোপনীয়তার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ প্রথম আইন, যেটা ডিজিটাল নিরাপত্তাকে অ্যাড্রেস করে। আমরা যেসময় এ আইনটি করি সেসময় সোশ্যাল মিডিয়ায় এতো অপরাধের ঘাঁটি ছিল না। এখন মনে করছি সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব প্রচারসহ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘিœত হচ্ছে।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও বিদেশ থেকে পরিচালিত হবার কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় সংঘটিত অপরাধ দমনে আমাদের স্থানীয় আইন সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে পারিনা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভিন দেশের সোশ্যাল মিডিয়া নিজ দেশে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন নতুন আইন করেছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। মোস্তাফা জব্বার জানান, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, তুরস্ক সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য নিজ দেশে নতুন আইন করেছে। আমরাও আমাদের বিটিআরসিকে বলেছি, আশা করছি আগামী দুসপ্তাহের মধ্যে তারা খসড়া তৈরি করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার অপপ্রচার, গুজব রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের হুমকি জানিয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, নিজস্ব আইন না থাকায় আমরা অপরাধীর তথ্যও পাই না। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর ছোট রাষ্ট্র। তাদের ডেটা সিঙ্গাপুরে রাখতে হবে। তেমনি আমাদের ডেটা আমাদের এখানে না রাখলে সমস্যা দেখা দেবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পর নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে সামনের ১০ বছরে নতুন নতুন অপরাধ দেখা দেবে- আশঙ্কা করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জব্বার বলেন, আমরা ডেটা সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রাইভেসির ওপর জোর দিয়েছি। আইনে এ বিষয়টিও থাকবে। প্রস্তাবিত নতুন আইনের এখনও নাম দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।
আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, সাইবার অপরাধগুলো এখন খুব অ্যালার্মিং হয়ে গেছে। সাইবার অপরাধ দমনের জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার হেড কোয়ার্টার এখানে শিফট করার মাধ্যমে মনিটর করবো। যেগুলোর জবাবদিহিতা থাকবে আমরা সেগুলোর পক্ষে। এগুলো যারা চালায় তাদের কার্যালয় যেন বাংলাদেশেও থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনো কিছু বন্ধ করে দেয়া হবেনা, আমরা বন্ধ করার পক্ষে না।