সুরমার ঢেউ সংবাদ :: মৌলভীবাজার পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যভিচার ও অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে। মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগটি দায়ের করেছেন বর্তমানে মৌলভীবাজার শহরের সেন্ট্রাল রোডের মোহাম্মদ রফিক মিয়া লন্ডনীর বাসার দোতলায় বসবাসরত নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মজুউর রহমানের বিধবা কন্যা ২ সন্তানের জননী পারভীন বেগম।
বিলম্বে প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ- প্রায় ২ বছর পূর্বে মৌলভীবাজারে অবস্থানরত বোনপুত্র আজিজুল খানের শালীর বিয়েতে পারভীন বেগমের সাথে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নস্থিত খলাগাঁও গ্রামের আব্দুল জব্বারের পুত্র, শহরের পশ্চিমবাজারের মুদি দোকানদার ও মৌলভীবাজার পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহমানের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে আব্দুর রহমান মুঠোফোনে পারভীন বেগমের সাথে যোগাযোগ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি তার সাথে দেখা করতে তার গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে তিনি বিয়ের প্রলোভন দিয়ে পারভীন বেগমের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন। এরপর থেকে তিনি একাধিকবার তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। অপরদিকে, ব্যবসার মূলধন বাড়ানোর কথা বলে তার কাছ থেকে ৪ কিস্তিতে নগদ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেন।
পরে তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার কথা বলে মৌলভীবাজার নিয়ে আসেন এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে প্রথমে শহরের গীর্জাপাড়া এলাকায় একটি ভবনের ৩য় তলায় একটি বাসা ভাড়া তাকে সেখানে রাখেন। ২ মাস পর ওই বাসা পরিবর্তন করে একইভাবে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে শহরের সেন্ট্রাল রোডের মোহাম্মদ রফিক মিয়া লন্ডনীর ৪ তলা ভবনের ৪র্থ তলায় বাসা ভাড়া নিয়ে তাকে রাখেন। পরে ৪র্থ তলা থেকে তাকে একই ভবনের ২য় তলার স্থানান্তর করেন। সবকিছু যথাযথভাবেই চলছিল। কিন্তু, করোনা মহামারী শুরু হবার পর ভরণ-পোষণ বন্ধ হয়ে গেলে একপর্যায়ে পারভীন বেগম বিষয়টি বাসার কেয়ারটেকার বিলাল মিয়াকে জানান। তিনি একাধিকবার আব্দুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলেও আজ আসব কাল আসবো বলে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে পারভীন বেগম কেয়ারটেকার বিলাল মিয়াকে নিয়ে আব্দুর রহমানের বাড়িতে যান। এসময় আব্দুর রহমান বাসায় নিয়ে যাবার কথা বলে গাড়িতে উঠিয়ে শহরের বনশ্রী এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে তার এক বন্ধুর সহায়তায় পারভীন বেগমকে উলঙ্গ করে অমানবিক নির্যাতন করেন। তাদের অমানবিক নির্যাতনে অজ্ঞান হয়ে পড়লে পারভীন বেগমকে ওই বাড়ী থেকে নিজ ভাড়াবাসায় নিয়ে রেখে যান। এরপর আব্দুর রহমান তাকে ভাড়াবাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য কেয়ারটেকার বিলাল মিয়াকে চাপ দেন এবং বাসার বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বন্ধ করে দেন। এমতাবস্থায়, চরম মানবেতর পরিস্থিতিতে পতিত অসহায় পারভীন বেগম নিরুপায় হয়ে গত ২৮ জুলাই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ (ডকেট নং- ২৮২০/ভি) দায়ের করেন।
ভূক্তভোগী পারভীন বেগম বলেন, অনুনয় বিনয়, চাপাচাপি ও বিয়ের আশ্বাসে আমি সরল বিশ্বাসে আব্দুর রহমানের সাথে মৌলভীবাজারে আসি। তার ব্যবসার মূলধন বাড়ানোর আবদারে আমি সরল বিশ্বাসে তাকে ৪ বারে নগদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা দেই। তা সত্তেও সে আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। সে একটা মহা বেইমান। আমি ন্যায়বিচারের আশায় পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগ করেছি। আমি ন্যায়বিচার চাই, আমার টাকা ফেরৎ চাই। এসময় পারভীন বেগম তার মা, তার ছোট মেয়ে ও ধর্মভাই টিপু মিয়ার উপস্থিতিতে বাসার কেয়ারটেকার বিলাল মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান- আমি আব্দুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছি। দেখি নিষ্পত্তি করা যায় কি-না। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য মৌলভীবাজার পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহমানের ০১৭১১-০০৪১৫৯ নম্বরযুক্ত মোবাইল ফোনে ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর একাধিকবার ডাকলেও তিনি কোন সাড়া না দেয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।