সুরমার ঢেউ বিনোদন :: জন্মদিনে সবার দোয়া চাইলেন দেশের কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের গানসহ গানের নানা ধারায় সফল পদচারণা এ কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পীর। তার কণ্ঠে সুবাস ছড়িয়েছে উচ্চাঙ্গ, ধ্রুপদ এবং লোকসংগীত থেকে শুরু করে আধুনিক বাংলা গানও। তবে সিনেমার গানে সাবিনার কণ্ঠ ঢালিউডের গর্ব হয়ে আছে।
এ কিংবদন্তির জন্মদিন ছিল ৪ সেপ্টেম্বর। প্রতিবছরের মতো এবারেও ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছায় দিনটি শুরু হয়েছে সাবিনা ইয়াসমিনের। দিনটিকে উপলক্ষ্য করে সাবিনা ইয়াসমিনের পরিবার, বন্ধু-স্বজনেরা তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংগীতাঙ্গনের মানুষেরা। সেইসঙ্গে ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবিনার ভক্ত-অনুরাগীরা তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট করেছেন স্ট্যাটাস-ছবি। জন্মদিন নিয়ে গণমাধ্যমে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘জন্মদিনে আব্বা-আম্মাকে খুব মনে পড়ে। তাদের খুব মিস করি। আমার বোনদেরও মিস করি। সবার কাছে দোয়া চাই তাদের জন্য। আমার জন্যও দোয়া করবেন। যেন সুস্থ্য থাকি। সবার ভালোবাসা আমাকে প্রেরণা যুগায়। এ ভালোবাসায় আবদ্ধ থাকতে চাই আমৃত্যু।’
সাবিনা ইয়াসমিন ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম লুৎফর রহমান ও মা বেগম মৌলুদা খাতুন। সাবিনা ইয়াসমিনরা ৫ বোনের মধ্যে ৪ বোনই গান করেছেন। তারা হলেন- ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিন এবং সাবিনা ইয়াসমিন। দাম্পত্য জীবনে সাবিনা ইয়াসমিন ১ কন্যা ফাইরুজ ইয়াসমিন ও ১ পুত্র শ্রাবণের জননী।
প্রসঙ্গত, বড় বোন প্রয়াত ফরিদা ইয়াসমিন যখন গান শিখতেন দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে, তখন ছোট্ট সাবিনাও উপস্থিত থাকতেন। পরবর্তীতে ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে একটানা ১৩ বছর তালিম নিয়েছেন। মাত্র ৭ বছর বয়সেই তিনি স্টেজ প্রোগ্রামে অংশ নেন। ছোটদের সংগঠন খেলাঘরের সদস্য হিসেবে রেডিও ও টেলিভিশনে গান গেয়েছেন নিয়মিত।
প্রয়াত বরেণ্য সুরকার-সংগীত পরিচালক রবিন ঘোষের সংগীত পরিচালনায় এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ সিনেমাতে ১৯৬২ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম গান করেন। তবে ১৯৬৭ সালে আমজাদ হোসেন ও নূরুল হক বাচ্চু পরিচালিত ‘আগুন নিয়ে খেলা’ সিনেমাতে আলতাফ মাহমুদের সংগীত পরিচালনায় ‘মধু জোছনা দীপালি’ গানটি গাওয়ার মধ্য দিয়ে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। বরেণ্য এই সংগীত শিল্পী ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পদকসহ সর্বোচ্চ ১৩ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে প্রমোদকার (খান আতাউর রহমানের ছদ্ম নাম) পরিচালিত ‘সুজন সখী’ সিনেমাতে গান গাওয়ার জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। দীর্ঘ সংগীত জীবনে ১৬ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন বাংলা গানের এই নক্ষত্র। দেরীতে হলেও সাবিনা ইয়াসমিনের জন্মদিন উপলক্ষ্যে সুরমার ঢেউ পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন আরো অনেকদিন সুস্থ্যতায় সবার মাঝে বেঁচে থাকুন গানের পাখি হয়ে- এ কামনা তার ভক্ত অনুরাগীদের।