সুরমার ঢেউ সংবাদ :: কুলাউড়ার জালালীয়া দাখিল মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সময় হবে কবে ? এ প্রশ্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ, এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের। কুলাউড়ার ইউএনও বছরের পর বছর ধরে ওই মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তার পক্ষপাতমূলক আচরণসহ রহস্যজনক ভূমিকা পালণ করার কারণেই এ প্রশ্ন উঠেছে অভিভাবকবৃন্দ, এলাকাবাসী ও সচেতন মহলে। মাদ্রাসার ছাত্রীদের শ্লীলতাহানী, যৌন হয়রানী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশনা অমান্য, মেয়াদোত্তীর্ণ পরিচালনা কমিটি দিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা ইত্যাদি অনিয়ম-দূর্ণীতি, অনৈতিকতা ইত্যাদি তদন্তে প্রমানীত হওয়া সত্তেও বছরের পর বছর ধরে মাদ্রাসা সুপার মাওঃ আবদুস শহীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তার পক্ষপাতমূলক আচরণসহ রহস্যজনক ভূমিকা পালণ করছেন ইউএনও। ফলে, ক্রমশঃ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকমহল। অপরদিকে, ব্যাহত হচ্ছে দীনি শিক্ষা কার্যক্রম।
জানা গেছে- মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণীর ৭ জন ছাত্রী দীর্ঘদিন যাবৎ যৌন হয়রানীর শিকার হয়ে একপর্যায়ে ১৫ জন শিক্ষার্থী গত ৩১ অক্টোবর ২০১৮ সালে মাদ্রাসা সুপার মাওঃ আবদুস শহীদের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করে। ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রী গত ০১ নভেম্বর ২০১৮ সালে সুপারের অশালীন আচরণের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইউএনও বরাবর অভিযোগ করে। একইদিন বিকালে ওই ছাত্রীর পিতাও ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেন। কিন্তু, দীর্ঘদিনেও কোথাও কোন প্রতিকার না পেয়ে ওই ছাত্রীর পিতা গত ১৯ আগষ্ট ২০১৯ সালে মৌলভীবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে পিবিআই ঘটনাটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতাসহ সুপারের অনিয়ম-দূর্ণীতির বিষয়াদি উল্লেখ পূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
অপরদিকে, মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি নির্বাচনের জন্য কুলাউড়ার ইউএনও গত ১৭/০৬/২০১৯ইং তারিখের ০৫.৬০.৫৮৬৫.০০১. ০৭.০০২.১৯-৫৮৬ (ক)নং স্মারকে ইউএসইও-কে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করলে, তিনি গত ২০/০৬/২০১৯ইং তারিখের ৩৭.০২.৫৮৬৫.০০.০০০.৩২০.১৯-৪৫৭নং স্মারকে মাদ্রাসা সুপারকে ‘মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি নির্বাচনের লক্ষ্যে তফশীল ঘোষণার জন্য তথ্য’ চাহিত হন। কিন্তু, মাদ্রাসা সুপার গত ০১/০৭/২০১৯ইং তারিখে বোর্ড কর্তৃক কমিটি অনুমোদনের কপি প্রদান করলেও অন্যান্য তথ্যাদি প্রদান না করায় ইউএসইও গত ০৯/০৭/২০১৯ইং তারিখের ৩৭.০২.৫৮৬৫.০০.০০০.৩২০.১৭-৪৬৪নং স্মারকে ইউএনও-কে অবহিত করলে, ইউএনও গত ১১/০৭/২০১৯ইং তারিখের ০৫.৬০.৫৮৬৫.০০১.০৭.০০২.২০১৬-৬৮৬ (ক)নং স্মারকে ইউএসইও-কে ‘বিধি মোতাবেক নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য’ পুণরায় নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে ইউএসইও গত ২১/০৭/২০১৯ইং তারিখের ৩৭.০২.৫৮৬৫.০০.০০০.৩২০.১৭-৪৭১নং স্মারকে ইউএনও-কে ‘মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি নির্বাচন পরিচালনায় সময়ের বাধ্যবাধকতা থাকা প্রসঙ্গে’ অবহিত করেন। এরপর থেকে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি নির্বাচনের আর কোন কার্যক্রম প্রতীয়মান হচ্ছেনা। এতেকরে স্থানীয় সচেতন মহল ধারণা করছেন, মাদ্রাসা সুপারকে রক্ষার জন্যই ইউএনও এহেন রহস্যজনক ভূমিকা পালণ করছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে এ পর্যন্ত দুই দুইবার কুলাউড়ার ইউএনও’র সাথে যোগাযোগ করলে, প্রতিবারই তিনি বলেন- আইনী জটিলতার কারণে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা। অপেক্ষা করুন, সময়মত অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কুলাউড়ার জালালীয়া দাখিল মাদ্রাসা সুপার মাওঃ আব্দুস শহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সময় হবে কবে ?