এনড্রোয়েড ফোন ও ইন্টারনেট না থাকায় কমলগঞ্জে ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে পাঠগ্রহণ করতে পারেনি

এনড্রোয়েড ফোন ও ইন্টারনেট না থাকায় কমলগঞ্জে ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইনে পাঠগ্রহণ করতে পারেনি

সাপ্তাহিক সুরমার ঢেউ :: কোভিড-১৯-এর অচলাবস্থায় করোনা প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনায় সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যায় চালু করেছেন অন লাইনে পাঠদান। সরকারিভাবেও সংসদ টিভিতে পাঠদান চালু রয়েছে। শহর, হাট বাজারের অবস্থা সম্পন্ন সন্তানরা এনড্রোয়েড মুঠোফোনে ওয়াইফাই ও এমবির সুযোগ নিয়ে ওয়াটসআপ ও ল্যাপটপ ব্যবহার করে এ সুযোগ গ্রহন করছে। তবে গ্রামের দরিদ্র পরিবার ও পিছিয়ে পড়া চা বাগানের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
মৌলভীবাজরের কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এনড্রোয়েড মুঠোফোন ও ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় শতকরা ৬৫ শতাংশ মিক্ষাথীয় অন লাইনে পাঠ গ্রহনের সুযোগ নিতে পারেনি। কমলগঞ্জ উপজেলা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ প্রধানদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনায় তাদের শিক্ষকরা অন লাইনে বাড়িতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন। তবে এই সুযোগ নিতে পারছে সীমিতহারে। যাদের এনড্রোয়েড মুঠোফোন, ল্যাপটপ, এমবি, ব্রডব্যান্ড ও ওয়াইফাই সুবিধা আছে তারাই এ সুযোগটি গ্রহন করতে পারছে। কিন্তু স্কুল কলেজের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই গ্রাম ও চা বাগানের দরিদ্র পরিবারের সন্তান।
ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রী পাশ করা শমশেরনগর চা বাগানের শ্রমিক সন্তান মোহন রবিদাস বলেন, কোভিড-১৯ এর এই অচলাবস্থার সময়ে (এবং পরবর্তী সময়ে) পাহাড় ও চা বাগানের ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে মূলধারার ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বেশীর ভাগ পাহাড় ও চা বাগানের মানুষের বাড়িতে টেলিভিশন, স্মার্টফোন-ইন্টারনেট তো নেই এমনকি বিদ্যুৎ সুযোগও নেই। তাই সেখানকার ছেলে-মেয়েরা সরকারের “আমার ঘরে আমার স্কুল” কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপরদিকে এর সুফল পাচ্ছে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরা।
কমলগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, শমশেরনগর এ এ টি এম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কালীপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়, মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বলেন, সরকারি নির্দেশনা রয়েছে এ দুর্যোগের সময় অন লাইনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে। অনেক শিক্ষক তা করছেন। তবে গ্রামের দরিদ্র পরিবার ও চা বাগানের দরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েরা অন লাইনের সুযোগ নিতে পারছে না। আর এ সুযোগ বঞ্চিতরা শতকরা ৬৫ শতাংশ হবে বলেও তারা বলেন। তবে প্রধান শিক্ষকরা অন লাইনে পাঠদানের বাহিরে গিয়ে সকল শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে তাদেরকে বিশেষ সাজেশন দিয়ে বাড়িতে লেখা পড়ায় ব্যস্ত রাখছেন। আর বাড়িতে লেখাপড়া করার পর তাদের বিশেষ মূল্যায়নী পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কমলগঞ্জ সরকারি গন মহাবিদ্যালয়, আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজ ও সুজা মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষরা বলেন, সরকারি নির্দেশনায় তার কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষক বাড়িতে আটকা থাকা শিক্ষার্থীদের অন লাইনে পাঠদান করাচ্ছেন। তবে অধ্যক্ষরা আরো বলেন, গ্রামের ও চা বাগানের দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা স্মার্টফোন ও এমবির অভাবে এ সুযোগ থেকে পিছিয়ে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *