ইতালিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একটি পরিবারের সবাই

ইতালিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একটি পরিবারের সবাই

সাপ্তাহিক সুরমার ঢেউ :: ইতালিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একটি পরিবারের সবাই। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে উৎপত্তি হওয়া করোনা ভাইরাস সবচেয়ে বেশি তা-ব চালিয়ে যাচ্ছে ইতালিতে। করোনায় প্রাণহানি ও অসুস্থ্যদের হিসাব রাখা আন্তর্জাতিক সংস্থা ওর্য়াল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, এ সংক্রমণে বিশ্বের সর্বমোট মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মৃত্যু ঘটেছে ইতালিতে। সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে দেশটির উত্তরে অবস্থিত লোম্বার্দির ভোঘেরা শহরে। ইতালির স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার জানিয়েছে, ইতালিতে করোনা সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল লোম্বার্দি। সেখানকার ভোঘেরা শহরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যেই একে একে মারা গেছেন একই পরিবারের সব সদস্য।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, মার্চের শেষ সপ্তাহে জ্বরের কবলে পড়েন ভোঘেরা শহরের বাসিন্দা আলফ্রেদো বারতুচ্চির। এরপর শুরু হয় তার কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। দু-একদিনের মধ্যেই পরিবারের সবাই একই রকম কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন। পরীক্ষার পর তাদের সবার শরীরে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। এরপর একই হাসপাতালে নিয়ে তাদের চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গত ২৭ মার্চ প্রথমে মারা যান ৮৬ বছর বয়সী আলফ্রেদো বারতুচ্চি। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই মারা যান তার দুই ছেলে দানিয়েল (৫৪) ও ক্লদিও (৪৬) এবং ১ এপ্রিল মারা যান আলফ্রেদোর স্ত্রী ৭৭ বছর বয়সী অ্যাঞ্জেলা।
জানা গেছে, পেশায় কামার ছিলেন আলফ্রেদো বারতুচ্চি। নিজের দুই ছেলেকেও এ পেশায় নিযুক্ত করেছিলেন। ভোঘেরা শহরে তারা তিনজনই ছিলেন অভিজ্ঞ ও সুপরিচিত কামার। চলতি বছরের শুরুতে ছোট ছেলে ক্লদিও পারিবারিক এই পেশার বিষয়ে স্থানীয় দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন ‘বাবার হাত ধরে এ পেশায় আমার অন্তর্ভুক্তি। তাই আমি গর্বিত। গত ১০ বছর ধরে গর্বভরে আমি কাজ করে যাচ্ছি। কারণ বাবা আমার শিক্ষক এবং তিনি এ কাজে উত্তম। আমি তার মতো হতে চাই।’ ক্লদিয়ার সেই ইচ্ছা পূরণ হতে দেয়নি মহামারী করোনা। কামারশালাসহ পুরো পরিবারই এখন ইতিহাস। উল্লেখ্য- করোনা ভাইরাসে সারাবিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত অঞ্চল হচ্ছে ইতালির লোম্বার্দি। মৃত্যুর সংখ্যায় এলাকাটির অবস্থান সবার ওপরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *