সুরমার ঢেউ সংবাদ : কুলাউড়ার সকল চা-বাগানের হতদরিদ্র অস্বচ্ছল শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। হতদরিদ্র শ্রমিকদের কাছ থেকে সরকারের অনুদান পাঁচ হাজার টাকার বিপরীতে যে টাকা শ্রমিকদের কাছ থেকে শ্রমিক নেতারা আদায় করেছিলেন তা ফিরিয়ে দেয়ার কথা বললেন ইউএনও এটিএম ফরহাদ চৌধুরী। চা শ্রমিকদের মধ্যে দেয়া অনুদানে এটাই প্রথম কোন উদ্যোগ- যাতে করে অনিয়ম বন্ধ করা যায়।
প্রত্যেকবারের মতো এবারও সিলেট বিভাগের প্রায় ১৫৮ চা বাগানে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পাঁচ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হচ্ছে। গতবছরের যে তালিকা হযেছিল সেগুলোর চেক প্রদান করা হচ্ছে এবং আগামী বছরের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। এতে সকল মিডিয়া জুড়েই তালিকায় অনিয়ম দূর্নীতসহ বিভিন্ন অভিযোগের রির্পোট প্রকাশিত হচ্ছে। অনেক সচেতন চা শ্রমিক নিজেরাও পঞ্চায়েত কমিটির নেতাদের/ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলা প্রশাসক, ইউএনও’র কাছে অভিযোগ করেছেন।
এরই প্রেক্ষিতে ৫ জুলাই রোববার দুপুরে কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী এই অনিয়ম রুখতে বার বার চা বাগান পরিদর্শন করে এক জরুরী সভার ডাক দিলেন। কুলাউড়া উপজেলার ১৯টি চা বাগানের মেম্বার, পঞ্চায়েতের সভাপতি/সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের ডাকলেন এবং সাফ জানিয়ে দিলেন গরিব শ্রমিকদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য। সভার প্রথমেই বিভিন্ন চা পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতিরা দাবি করলেন, ছবি প্রিন্ট, ফটোকপি করা এবং মাস্টার রুল রেডি করাসহ যাতায়াত বাবদ টাকা নিয়েছি। দিলদারপুর ও ক্লিভডন চা বাগানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হাসিব মিয়া বলেন, আমরা এ কার্যক্রমে সহযোগীতা করতে চাই। ব্রাহ্মণবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মমদুদ হোসেন বলেন, আমরা সবাই সেবা করার কথা বলে এসে কেন চা শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা নিব। আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।
শরীফপুর ইউপি চেয়ারম্যান জুনাব আলী বলেন, গরিব অসহায় চা শ্রমিকদের কাছ থেকে কেন টাকা নেয়া হয় সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক বলেন, চা শ্রমিকরা ব্যাংকে গেলে বিভিন্নভাবে অবহেলার শিকার হতে হয়। তিনি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী সকল বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা যারাই হতদরিদ্র চা শ্রমিকদের কাছ থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক সরকার প্রতিবছর চা শ্রমিকদের মাঝে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া বাবদ টাকা নিয়েছেন। তারা অবশ্যই এ টাকা ফেরত নিবেন। অন্যথায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার যেন চা শ্রমিকরাও বুঝতে পারে। তালিকা করতে গিয়ে যদি কেউ আবারও টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠে তাহলে সেক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। চা বাগানের ব্যবস্থাপকগণ, ইউপি চেয়ারম্যানগন খেয়াল রাখবেন কোন চা শ্রমিক নেতা এ কার্যক্রমে শ্রমিকদের ঠকিয়ে যেন মুনাফা না করে।