শ. ই. সরকার জবলু : মৌলভীবাজারে প্রধানমন্ত্রীর উপহারপ্রাপ্ত মসজিদের তালিকা নিয়ে লুকোচুরি করছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজার। একই অবস্থা উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের। মৌলভীবাজার জেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারপ্রাপ্ত মসজিদের তালিকা চেয়ে দীর্ঘ প্রায় ১ মাসে ৪ বার যোগাযোগ করলেও ইসলামিক ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজারের উপ-পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম প্রতিবারই জানান, তার কাছে মসজিদের কোন তালিকা নেই। মসজিদের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা তালিকা করে বন্টন করছেন। তাই, মসজিদের তালিকা সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে রয়েছে। বন্টন শেষে তারা ইসলামিক ফাউন্ডেশনে তালিকা পাঠাবেন। তারপর আমি তালিকা দিতে পারবো। তার কথামতো মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফুল ইসলামের কাছে সদর উপজেলার মসজিদের তালিকা চাইলে তিনি জানান, মসজিদের তালিকা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাছে আছে। আমার কাছে কোন তালিকা নেই। সর্বশেষ, তালিকা প্রাপ্তির আশা ছেড়ে দিয়ে মৌলভীবাজার জেলার উপজেলা ভিত্তিক অর্থ বরাদ্ধেও তালিকা চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মেলভীবাজারের উপ-পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম হাতে লিখা একটি বরাদ্ধের তালিকা সরবরাহ করেন। সেই তালিকায় অবশ্য উপজেলা ভিত্তিক মসজিদের সংখ্যা লেখা রয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজারের সরবরাহকৃত হাতে লিখা বরাদ্ধের তালিকা অনুযায়ী সদর উপজেলার ৭৯৭টি মসজিদে ৫ হাজার টাকা হারে ৩৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, রাজনগর উপজেলার ৫১৪টি মসজিদে ২৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা, কুলাউড়া উপজেলার ৭৭১টি মসজিদে ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, বড়লেখা উপজেলার ৫১২টি মসজিদে ২৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা, কমলগঞ্জ উপজেলার ৪৩৩টি মসজিদে ২১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৪০৮টি মসজিদে ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও জুড়ী উপজেলার ২৭০টি মসজিদে ৫ হাজার টাকা হারে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। জেলার ৭ উপজেলার মোট ৩ হাজার ৭শ ৫টি মসজিদে ৫ হাজার টাকা হারে বরাদ্ধের পরিমান মোট ১ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তালিকা নিচে নোট লিখা রয়েছে, প্রত্যেক উপজেলার বাদ পড়া মসজিদের তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের অফিস হতে আসলে প্রেরণ করা হবে।
ধর্মমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রতিটি মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন ২৫০০ টাকা করে পাবেন। কিন্তু, ইসলামিক ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজারের উপ-পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, সরকার ইমাম মুয়াজ্জজিনদেরকে কোন টাকা দেয়নি। আমাদের কাছে সরকার থেকে এমন কোন কথা আসেনি। ৫ হাজার করে যে টাকা এসেছে তা মসজিদের ব্যয় নির্বাহের জন্য৷ এখন কমিটি কি করবে সেটা তাদের বিষয়। কথা হলো, মন্ত্রীর ঘোষণা একরকম আর ইসলামীক ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজার বলছে আরেক রকম। ইসলামিক ফাউন্ডেশন টাকাটা দিচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে মসজিদ পরিচালনা কমিটিকে। মন্ত্রীর ঘোষণা ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বক্তব্যের রকমফের এবং মসজিদগুলোর নামের তালিকা নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের লুকোচুরির কারণে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তি।