সুরমার ঢেউ সংবাদ : করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ও বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশের ন্যায় মৌলভীবাজার জেলাকেও রেড জোন, ইয়েলো জোন ও গ্রীন জোনে ভাগ করা হয়েছে। এ জোন বিভক্তির তালিকা ১৫ জুন সোমবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। সংক্রমণের হার বিবেচেনায় ইয়েলো ও গ্রীন জোনে পড়েছে মৌলভীবাজার জেলার অধিকাংশ এলাকা। রেড জোনে পড়েছে অল্প কিছু এলাকা।
জানা গেছে- রেড জোনে পড়েছে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালিঘাট রোড, মিশন রোড, রুপসপুর, সবুজভাগ, মুসলিমবাগ, লালবাগ ও বিরাইমপুর এবং কুলাউড়া উপজেলার মাগুরা-মনসুর, নন্দনগর।
বাকি সব এলাকা পড়েছে ইয়েলো ও গ্রীন জোনে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে সমন্বয় করে এটি বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. তওহীদ আহমদ।
সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো এলাকায় ১ লাখের মধ্যে ১০ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হলে ওই এলাকা রেড জোন। কোনো এলাকায় ১ লাখের মধ্যে ৩ থেকে ৯.৯ শতাংশ আক্রান্ত হলে ওই এলাকা ইয়েলো জোন। আর, কোনো এলাকায় ১ লাখের মধ্যে ০ থেকে ২.৯ শতাংশ আক্রান্ত হলে ওই এলাকা গ্রীন জোন।
জানা গেছে, রেড জোন এলাকা পুরো লকডাউন করে দেয়া হবে। রেড জোনের কেউ এলাকার বাইরে যেতে বা বাইরে থেকে এলাকার ভেতরে যেতে পারবে না। রেড জোনের দোকানপাট, বিপণিবিতান, সরকারী-বেসরকারী কার্যালয় সব বন্ধ থাকবে। এমনকি রেড জোনে ঘরেই নামাজ আদায় করতে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় এখনও রেড জোন নেই। ইয়েলো জোন : খলিলপুর, আখাইলকুড়া, কনকপুর ও গিয়াসনগর ইউনিয়ন এবং মৌলভীবাজার পৌরসভা। গ্রীন জোন : আপার কাগাবলা, মনুমুখ, কামালপুর, মোস্তফাপুর, নাজিরবাদ, চাঁদনীঘাট, একাটুনা ও আমতৈল ইউনিয়ন।
রাজনগর উপজেলায় এখনও রেড জোন নেই। ইয়েলো জোন : মনসুরনগর, পাঁচগাঁও ও রাজনগর সদর ইউনিয়ন। গ্রীন জোন : ফতেপুর, উত্তরবাগ, কামারচাক, টেংরা ও মুন্সীবাজার ইউনিয়ন।
কুলাউড়া উপজেলায় রেড জোন : পৌর এলাকার মাগুরা ও মনসুর এলাকা এবং বরমচাল ইউনিয়নের নন্দনগর। ইয়েলো জোন : জয়চণ্ডী, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর (মনসুর এলাকা) ও হাজীপুর ইউনিয়ন। গ্রীন জোন : ভুকশিমইল, ভাটেরা, কুলাউড়া সদর, রাতগাঁও, টিলাগাঁও, কর্মধা, পৃথিমপাশা ও শরীফপুর ইউনিয়ন।
জুড়ী উপজেলায় এখনও রেড জোন নেই। ইয়েলো জোন : জায়ফরনগর ও গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন। গ্রীন জোন : পশ্চিম জুড়ী, পূর্ব জুড়ী, সাগরনাল ও ফুলতলা ইউনিয়ন।
কমলগঞ্জ উপজেলায় এখনও রেড জোন নেই। ইয়েলো জোন : আলীনগর, মাধবপুর ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন এবং কমলগঞ্জ পৌরসভা। গ্রীন জোন : রহিমপুর, পতনউষার, মুন্সীবাজার, শমসেরনগর, আদমপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়ন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলায় রেড জোন : পৌর এলাকার কালিঘাট রোড, শ্যামলী, ক্যাথলিক মিশন রোড, সদর ইউনিয়নের রুপসপুর, সবুজভাগ, মুসলিমবাগ, লালবাগ এবং বিরাইমপুর। ইয়েলো জোন : কালাপুর, আশিদ্রোন ও কালিঘাট ইউনিয়ন। গ্রীন জোন : মির্জাপুর, ভুনবীর, সিন্দুরখান, রাজঘাট ও সাতগাঁও ইউনিয়ন।
বড়লেখা উপজেলায় রেড জোন এখন নেই। ইয়েলো জোন : নিজ বাহাদুরপুর, বড়লেখা সদর ও সুজানগর ইউনিয়ন। গ্রীন জোন : বর্ণি, তালিমপুর, দক্ষিণবাগ দক্ষিণ, দক্ষিণবাগ উত্তর, দাসের বাজার, উত্তর শাহবাজপুর, দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়ন এবং বড়লেখা পৌরৈসভা।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান- সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা জোনভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন বলেন, অন্যান্য জেলার তুলনায় মৌলভীবাজার জেলায় আক্রান্তের হার এখনও কম। যে কারণে ইয়েলো ও গ্রীন জোনে পড়েছে জেলার অধিকাংশ এলাকা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষের সচেতন হবার বিকল্প নেই। আগামী ২ মাস আমাদের জন্য বিপদ হতে পারে। সতর্কতাই পারে এ বিপদ থেকে রক্ষা করতে।
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজার জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৯১ জন, সুস্থ্য হয়েছেন ৬৯ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ জন। করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩ জন। তবে, অপেক্ষমান আছে নমুনা পরীক্ষার ৬ শতাধিক রিপোর্ট।