সুরমার ঢেউ সংবাদ : মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত চা বাগানের শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ৩ হাজার শ্রমিকের মধ্যে এককালীন ৫ হাজার টাকার চেক বিতরনে চা বাগানগুলোতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৮ সালের বরাদ্দকৃত চেক চলতি বছরের জুন মাস থেকে বিতরণ শুরু করেছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। শমসেরনগর ও কানিহাটি চা বাগানের তালিকায় দুটি এনআইডি’র বিপরীতে ৭৪ জন শ্রমিকের নাম রয়েছে। একইভাবে অন্যান্য চা বাগানের ষ্টাফ, কর্মচারী, অশ্রমিক, জনপ্রতিনিধির আত্মীয়-স্বজনদের নামও তালিকায় রয়েছে। চা বাগানের সাথে সংশিষ্টরা বিষয়টি তদন্ত করার দাবী জানিয়েছেন।
জানা যায়, সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় কমলগঞ্জ উপজেলায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের ২২টি চা বাগানের চা শ্রমিকদের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহায়তা এককালীন ৫ হাজার টাকার চেক বিতরণের জন্য ৩ হাজার শ্রমিকের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। সম্প্রতি মৌলভীবাজার- ৪ আসনের সাংসদ উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ ২ হাজার ২শ জন শ্রমিক পরিবারের মাঝে ৫ হাজার টাকার চেক বিতরণ করার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সারা উপজেলায় চেক বিতরণ কার্য়ক্রম উদ্বোধন করা হয়। তারপর থেকেই সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাগান পঞ্চায়েত কর্তৃক তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম উঠেছে। বিশেষ করে শমশেরনগর ও কানিহাটি চা বাগানের তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়েছে। তালিকায় দেখা যায়, শমশেরনগর চা বাগানের প্রাপ্ত ১১৩নং হতে ১৪০নং পর্যন্ত ২৭ জন শ্রমিকের নামের পাশে একই এনআইডি (৫৮১৫৬৮৫) নম্বর দেয়া আছে। একই তালিকায় শমশেরনগর ইউনিয়নের শিংরাউলী গ্রামের মাইক্রোবাস চালক নুনু মিয়ার নামও রয়েছে। তাছাড়া তালিকাভুক্ত অধিকাংশ লোকই চা বাগানের নিবন্ধিত চা শ্রমিক নন। একই চা বাগানের ফাঁড়ি বাগান কানিহাটি চা বাগানের নামের তালিকায় আরেকটি এনআইডির (৫৮১৫৬৮৫৯৫) বিপরীতে ১নং হতে ৪৫নং পর্যন্ত ৪৫ জন শ্রমিকের নাম রয়েছে। একইভাবে উপজেলার আলীনগর চা বাগানের তালিকায়ও ষ্টাফ, কর্মচারী ও চাকুরীজীবিদের নাম রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাধবপুর, পাত্রখোলা, মৃত্তিঙ্গা, চাম্পারায়সহ বেশ কয়েকটি বাগানের স্থানীয় পঞ্চায়েত ও জনপ্রতিনিধিরা শ্রমিকদের নাম ব্যবহার করে টাকা নয়ছয় করতে এমন কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন বলে সাধারণ শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন।্
অপরদিকে স্থানীয় সাংবাদিকরা সারা উপজেলায় বিতরণকৃত চা শ্রমিকদের এককালীন সহায়তার নামের তালিকা চাইলে সমাজসেবা অফিসার তালিকা দিতে রাজি হননি। পরে তথ্যাধিকার আইনে আবেদন করেছেন বলে সাংবাদিকরা জানান। এ বিষয়ে কানিহাটি চা বাগানের ইউপি মেম্বার সীতারাম বীন বলেন, তালিকা আমি করিনি। স্থানীয় বাগান পঞ্চায়েত ও চেয়ারম্যান করেছেন বলে জেনেছি। শমশেরনগর চা বাগানের ইউপি মেম্বার ইয়াকুব আলী বলেন, অনিয়মের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে ইউনিয়ন অফিসের কম্পিউটারে তালিকা করা হয়। হয়তো সেখানে ভুল হতে পারে। কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রাণেশ চন্দ্র বর্মা বলেন, কিছু অনিয়মের কথা শুনেছ্।ি তবে চেক বিতরণ করা হলেও সমাজসেবা বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে চেকের টাকা প্রদানে এখনও কোন নির্দেশনা দেয়া হয়নি।