ফলোআপ – মৌলভীবাজারের আখাইলকুড়া ইউনিয়নে সেই বিধবার ভিজিডির চাল ১৭ মাস যাবৎ উত্তোলন করছেন গ্রামপুলিশ চান মিয়া

ফলোআপ – মৌলভীবাজারের আখাইলকুড়া ইউনিয়নে সেই বিধবার ভিজিডির চাল ১৭ মাস যাবৎ উত্তোলন করছেন গ্রামপুলিশ চান মিয়া

সুরমার ঢেউ সংবাদ : মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার আখাইলকুরা ইউনিয়নে সেই হতদরিদ্র বিধবার ভিজিডির চাল ১৭ মাস যাবৎ উত্তোলন করছেন ইউপি চৌকিদার চান মিয়া। আর, এই চান মিয়া হচ্ছেন অভিযোগকারী পিয়ারা বেগমেরই আপন ভাই।

গত ১৮ মে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দায়েরী পিয়ারা বেগমের  লিখিত অভিযোগে কারো নাম উল্লেখ না থাকলেও, এ প্রতিনিধিসহ দু’জন সংবাদিকের অনুসন্ধানে এ তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযোগের তীর ছিল ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার  গৌছুল আজমের দিকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, পিয়ারা বেগমের অভিযোগ সঠিক।তবে, এ বিষয়ে গৌছুল আজম মেম্বার জড়িত কি না সেটা বলতে পারবো না।

আখাইলকুড়া ইউপি সচিব সুজিত লাল দাশ জানান- পিয়ারা বেগমের ভিজিডি’র চাল সর্বশেষ উত্তোলন করেছেন গ্রামপুলিশ চান মিয়া। গ্রামপুলিশ চান মিয়া এসময় ইউপি অফিসে উপস্থিত না থাকায় তার মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

৪নং ওয়ার্ড মেম্বার গৌছুল আজম জানান, পিয়ারা বেগম বিধবা নন, স্বামী পরিত্যক্তা। পিয়ারা বেগম যে তার নামীয় ভিজিডির কার্ড পাননি এবং চালও পাচ্ছেন না তা তিনি এর আগে জানতে পারেননি। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি আরো বলেন ওই মহিলার ভিজিডির চাল যে অন্য কেউ নিচ্ছেন, তা ইউপি সচিব বা অন্য কেউই আমাকে জানাননি। এমনকি ওই মহিলাও আমাকে জানাননি। তিনি বলেন, একটি কুচক্রীমহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এব্যাপারে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। এ ঘটনার সাথে যে-ই জড়িত থাকুক তাকে শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।

চেয়ারম্যান সেলিম আহমদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসে পিয়ারা বেগমের দায়েরী অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরেছেন এবং পিয়ারা বেগমের সাথে তিনি যোগাযোগও করেছেন। তিনি আরো বলেন, পিয়ারা বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।আশা করছি তদন্তে পিয়ারা বেগমের চাল আত্বসাৎকারী কে তা জানা যাবে এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ৫নং আখাইলকুড়া ইউনিয়নের ভিজিডি’র তালিকার ৩৫নং ক্রমিকে ৪নং ওয়ার্ডস্থিত আমুয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃতঃ আব্দুল কাদিরের কন্যা স্বামী পরিত্যক্তা হতদরিদ্র পিয়ারা বেগমের নাম থাকলেও, তিনি এ পর্যন্ত ভিজিডি কার্ড ও চাল কোনটাই পাননি । অথচ তার নামীয় কার্ডের বিপরীতে নিয়মিত ভিজিডি’র চাল উত্তোলন করা হচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে পিয়ারা বেগম গত ১৮ মে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন । গত ৩০ মে সাপ্তাহিক সুরমার ঢেউ অনলাইনসহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় এ ঘটনার সংবাদ প্রকাশিত হলে শুরু হয় তোলপার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ১ জুন সোমবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ঘটনাটি তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। তদন্ত শেষে জানা যাবে পিয়ারা বেগমের ভিজিডি’র কার্ড ও চাল আত্নসাৎকারী কে বা কারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *