জগন্নাথপুর :: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের অস্ত্রধারী সন্ত্রসীদের দৌরাত্ম মারাত্মক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকাশ্যে অস্ত্রের ঝনঝনানিতে গ্রামবাসী আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি গ্রামের সন্ত্রাসীকর্তৃক গোলাগুলির ঘটনায় বহুলোক আহত হন। প্রকাশ্যে গুলি ছুড়ে লোকদের গুরুতর আহত করলেও এখনও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হয়নি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ২৭ এপ্রিল দুপুরে সাহেল আহমদ নিজ জমির ধান কেটে নিয়ে আসার পথে সফিক মিয়ার বাড়ির সামনে নিজস্ব জায়গায় ধান মাড়াই দিতে গেলে সফিক মিয়া এতে বাঁধা প্রদান করেন এবং গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে সফিক মিয়ার পক্ষের লোকজন বন্দুকের গুলি ছুড়লে তিন জন গুলিবিদ্ধ হন এবং উভয়পক্ষের ১৫ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে সাহেল আহমদের পক্ষে রায়হান মিয়া (৩৫) বাবর মিয়া, (২৬) ও রানা মিয়া, (৩২) গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এবং সফিক মিয়ার পক্ষে সফিক মিয়া (৪৫) ও জাহাঙ্গীর মিয়া (২৪) লাঠির আঘাতে আহত অবস্থায় সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অন্য আহতদের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানার এসআই আতিকুর রহমান সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে সাহেল আহমদ বাদী হয়ে ২৯ এপ্রিল জগন্নাথপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি একটি অনলাইন পত্রিকায় সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে আসামী সফিক মিয়া মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন বলে যে খবর প্রকাশ করা হয়।
এব্যাপারে হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. হিমাংশু রায়ের সাথে বৃহস্পতিবার রাতে মুঠোফোনে আলাপ হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, এ ঘটনায় আহত রোগী সুস্থ হয়ে অনেক আগেই ছাড়পত্র দিয়ে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মোহাম্মদপুর গ্রামের ছৈল মিয়া জানান, গুলাগুলির মামলার আসামী আব্দুল গফফার, জসিম উদ্দিন ‘ মনির, বাবর গংরা গ্রামের মাষ্টার শায়েস্তা মিয়া হত্যা মামলার আসামী (মামলা নং ১, তারিখ ২.৪.২০০০ইং) সম্প্রতি আব্দুল গফ্ফার ও জসিম উদ্দিন উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় এসে ত্রাসের সৃষ্টি করেছে।
বাদী সাহেল আহমদ বলেন, আমার মামলার আসামী সন্ত্রাসীচক্র, খুন, ডাকাতি অস্ত্রবাজি করে এলাকায় আতংকের সৃষ্টি করেছে। এদের পিছনে ইন্ধন যুগাচ্ছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী জয়নাল আবেদীন।
তিনি আরও বলেন, সফিক মিয়ার লোকজন দুর্র্ধষ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা রয়েছে। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অবিলম্বে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও তাদের ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জোর দাবী জানান।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) মাহমুদুল হাসান চৌধুরী’র সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, ইতিমধ্যে ঐ মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা চলছে।
জগন্নাথপুর থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী’র সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, মামলা রেকর্ডের পর প্রধান আসামী আজিজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।